রাজ্যে ডিমের দাম (Egg Price) হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া নজরদারির পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না-সহ কৃষি, কৃষি বিপণন ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাজারদর নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর এবং বিশেষ টাস্ক ফোর্স যৌথভাবে নজরদারি চালাবে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনও অসাধু ব্যবসায়ী যাতে কৃত্রিম অভাব তৈরি করতে না-পারে, তার জন্য পুলিশ ও টাস্ক ফোর্সকে কঠোরভাবে তৎপর থাকতে হবে।
নজরদারির পাশাপাশি ‘সুফল বাংলা’র বিপণন কৌশলেও বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। অফিস ফেরত মানুষের সুবিধার জন্য এখন থেকে ৩৫টি সুফল বাংলা কেন্দ্র সন্ধেতেও খোলা থাকবে। এর মধ্যে ১৪টি কলকাতায় এবং বাকি ২১টি বিধাননগর, রাজারহাট ও উত্তর ২৪ পরগনার জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। ন্যায্য দামে ডিম-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে সময়সূচি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রশাসন স্বস্তি দেবে বলেই মনে করছে। বর্তমানে রাজ্যে সাড়ে সাতশোর বেশি সুফল বাংলা কেন্দ্র রয়েছে। জোগান ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে চলতি মাসের শেষে আরও ৫০টি ভ্রাম্যমাণ গাড়ি নামানো হবে বলেও বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- সোমেই কোচবিহার সফরে মুখ্যমন্ত্রী
রাজ্যের পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদন মাইতি জানান, ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধির জেরে ডিমের দাম আট টাকার ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হয়েছে, নইলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারত। তাঁর দাবি, গত বছর যেখানে গড় দাম ছিল ৫ টাকা ৬৫ পয়সা, সেখানে ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৭৪ পয়সায়। এই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই বাজার বিশ্লেষণ শুরু করেছে প্রশাসন। প্রাথমিক পর্যালোচনা বলছে, পোল্ট্রি শিল্পে গভীর সংকট তৈরি হয়েছে, আর তার মূল কারণ হাঁস-মুরগির খাদ্যের আকাশছোঁয়া দাম (Egg Price)। রাজ্যে ভুট্টা চাষ বাড়লেও তার সুফল পোল্ট্রি শিল্প পুরোপুরি পাচ্ছে না, কারণ উৎপাদিত ভুট্টার বড় অংশ ইথানল তৈরির কারখানায় চলে যাচ্ছে। জ্বালানির বিকল্প হিসেবে ইথানলের চাহিদা বাড়ায় হাঁস-মুরগির খাদ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে টান পড়ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি খাদ্য তৈরিতে উদ্যোগী হলেও কাঁচামালের ঘাটতি এবং মূল্যবৃদ্ধি সামগ্রিক উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ। ফলে তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে ডিমের খুচরো দরে, যা সাধারণ ভোক্তাদের উপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ তৈরি করছে।

