৬ মাস! সন্তান-সহ দেশে ফিরলেন সোনালি বিবি

শুক্রবার সন্ধ্যায় মালদহের মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র দিয়ে দেশে ফিরলেন সোনালি বিবি। ঘড়ির কাঁটা তখন ৭টায়।

Must read

প্রতিবেদন : শুক্রবার সন্ধ্যায় মালদহের মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র দিয়ে দেশে ফিরলেন সোনালি বিবি। ঘড়ির কাঁটা তখন ৭টায়। সোনালির সঙ্গে তাঁর ৮ বছরের ছেলে। কিন্তু বাকি ৪ জন কোথায়? মালদহের জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা বর্মন ঘোষ ঘটনাস্থলেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তাঁর প্রশ্ন, ভারতীয় হাই কমিশনারকে জিজ্ঞাসা করলাম বাকি ৪ জন কবে ফিরবেন? উত্তর দেয়নি। ফের ঘোটালা করতে চাইছে কেন্দ্র।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

২৬ জুন বাংলা বলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল সোনালি-সহ ৬ জনকে। তারপর দীর্ঘ টানাপোড়েন। টানা ১৬২ দিন জেল-আদালত এবং দুই দেশের প্রশাসনের মধ্যে দীর্ঘ দর কষাকষি। ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে জামিনের সম্ভাবনা থাকলেও বাস্তবে হয়নি। ফের শুক্রবার মামলা ওঠে। সন্তান-সহ জামিন হয় সোনালি বিবির। এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে মালদহ সীমান্তে নিয়ে আসা হয়। ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালিকে বিএসএফ ক্যাম্প থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় শারীরিক পরীক্ষার জন্য। সোনালির মুক্তিতে স্বাভবতই খুশি তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ৬ মাসের সংগ্রামের শেষে সাফল্য। সুপ্রিম নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্র দু’দিন ধরে পদক্ষেপ করেনি। তাই শুক্রবার আদালতে যেতে হয়েছে। বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের বড় সোনা মসজিদ এলাকায় ছিলেন সোনালি ও তাঁর সন্তান। বারবার কেন্দ্রের কাছে আবেদন ছিল তাঁর সন্তান যেন ভারতেই জন্মায়।

আরও পড়ুন-বিপর্যস্ত ইন্ডিগো, বিমান বাতিলে পঙ্গু পরিষেবা

দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন সোনালি ও তাঁর পরিবার। বাংলায় কথা বলায় তাঁকে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে কোনওরকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই বিএসএফ অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাজনৈতিক মহল। মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী শুনানিতে জানতে চান, সোনালির বাবা-মা ভারতীয় নাগরিক। তাহলে তাকে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে কোন তথ্যের ভিত্তিতে? নাগরিকত্ব জাচাইয়ের পদ্ধতিই বা কীভাবে করা হল? সোনালি একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং সঙ্গে রয়েছে তাঁর অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান। তাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়টি উপেক্ষা করে কীভাবে বাংলাদেশে পাঠান হল? অন্যদিকে বাংলাদেশের আদালতও শুনানিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সোনালি বাংলাদেশের নাগরিক নন। তার তথ্য-প্রমাণগুলি স্পষ্ট করছে তিনি ভারতীয় নাগরিক। ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেস বিশেষত সাংসদ সামিরুল ইসলাম দীর্ঘ লড়াই চালিয়েছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করছে দেশের অভিভাষণ নীতি কতখানি ঠুনকো এবং পরিচয় জাচাই ব্যবস্থাও দুর্বল তথ্যের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। আপাতত বাকি চারজনকে ফেরানোই লক্ষ্য সামিরুলদের।

Latest article