চাপে পড়ে রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রেসিডেন্সির উপাচার্য

প্রাক্তনীদের পোস্টারে নেই নেতাজি

0
87
presidency university

প্রতিবেদন : লজ্জা! প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Presidency University) প্রাক্তনীদের পোস্টারে রাখা হল না ভারতের বীর সন্তান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে। ২০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের পোস্টার প্রকাশ করা হয়। সেখানে সেরা ১০ প্রাক্তনীর তালিকায় মধ্যমণি অপর্ণা সেন কিন্তু স্থান নেই সুভাষচন্দ্র বসু বা ডিরোজিও-র। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উঠেছে তুমুল সমালোচনার ঝড়। ধিক্কার সমাজের সর্বস্তরে।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান অবিসংবাদিত। আর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, সেই সময় কলেজে পড়ার সময় ইংরেজদের বিরুদ্ধে তীব্র অবস্থান নিয়েছিলেন নেতাজি। অথচ বাংলার এই বীর সন্তানকে স্থান দেওয়া হল না প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের পোস্টারে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রেসিডেন্সির কৃতী প্রাক্তনীদের নিয়ে বেশ কিছু পোস্টার প্রকাশ হয়েছে। তাতে মধ্যমণি হয়ে বসে আছেন পরিচালক-অভিনেত্রী অপর্ণা সেন। কিন্তু কোথাও ছবি নেই নেতাজি বা ডিরোজিওর মতো মনীষীদের।
তবে এই প্রথম নয়, ২০১৬-তেও প্রেসিডেন্সির সেরা দশ প্রাক্তনীর তালিকাতে নেতাজি সুভাষচন্দ্রকে স্থান দেওয়া হয়নি। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চূড়ান্ত অবমাননাকর সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা হয়। অথচ এর ঠিক ১০০ বছর আগেই ভারত বিরোধী প্রফেসর ওটেন সাহেবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন তরুণ সুভাষ। নিগ্রহের ‘অপরাধে’ প্রেসিডেন্সি থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। প্রেসিডেন্সির ২০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যে ৬টি টিজার প্রকাশ করা হয়, সেখানে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত প্রাক্তনীরা। এই তালিকায় রয়েছেন জগদীশচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, সত্যজিৎ রায়, নবনীতা দেবসেনের মতো দিকপালরা। কিন্তু প্রথম থেকেই বাদ নেতাজি।

আরও পড়ুন-মেয়েদের বিয়ের বয়স নিয়ে কমিটি, অথচ মহিলা সদস্য মাত্র ১!

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ চরমে ওঠে। প্রশ্ন ওঠে, নেতাজিকে কি প্রাক্তনী বলে মানে না প্রেসিডেন্সি? একইসঙ্গে প্রশ্ন ওঠে, এই তালিকায় অপর্ণা সেনের অন্তর্ভুক্তির মাপকাঠি কি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো?
প্রবল চাপে পড়ে কোনওভাবে নিজেদের মুখরক্ষার চেষ্টা করেন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে তিনি রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আর দায় চাপিয়েছেন যে সংস্থাকে এই প্রচারের কাজে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের উপর। এবার থেকে তিনি নিজে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন অনুরাধা লোহিয়া। কিন্তু এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তিনি প্রথম থেকে দেখলেন না কেন? তার উত্তর দিতে পারেননি তিনি। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Education Minister)।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির অবদান তামাম বিশ্ব জানে। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকেই তাঁর লড়াই শুরু। ইংরেজদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার অভিযোগে তাঁকে প্রেসিডেন্সি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে পাশ করেন। তাহলে, সেরা দশ প্রাক্তনীর তালিকায় অপর্ণা সেন স্থান পেলেও কেন বাদ সুভাষচন্দ্র বসু? কেনই বা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হল সমাজ সংস্কারক হেনরি লুইস ভিভিয়ান ডিরোজিকে?