প্রতিবেদন : রাজ্যের শহরাঞ্চলেও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের মাথার উপর পাকা ছাদের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি এবার রাজ্যের সমস্ত পুর এলাকা জুড়ে চলবে এই আবাস কর্মসূচি। আরও দেড় লক্ষ বাড়ি নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দিতে একযোগে প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (সুডা)।
শহুরে আবাস যোজনার অধীনে ইতিমধ্যে তিন লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। নির্মাণাধীন আরও এক লক্ষ চল্লিশ হাজার বাড়ি। এর মধ্যেই নতুন দেড় লক্ষ উপভোক্তা বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় নামছে রাজ্য। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের পর্যায়ে বাছাই ও যাচাই দুটোই হবে আরও কঠোর ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে। আধারের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযুক্তকরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট একটি ইউনিফায়েড ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও চালু হচ্ছে। উপভোক্তার মোবাইল নম্বর, আধার ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট— এই তিন তথ্য একসঙ্গে মিলে কিনা তা যাচাই করেই ওটিপি যাচাইকরণ সম্পন্ন হবে। বাড়ি নির্মাণের জন্য আগে কোনও সরকারি প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন কি না, তাও আধার-ভিত্তিক তথ্য থেকে যাচাই করবে দফতর।
আরও পড়ুন-যুবভারতীর বিপুল ক্ষতিতে উঠছে প্রশ্ন, দায় এড়াল ফেডারেশন ও আইএফএ
কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ না দেওয়ায় গ্রামীণ এলাকার জন্য রাজ্য পৃথক ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা করে সহায়তা দিচ্ছে। তবে শহুরে আবাস প্রকল্পে হিসেব ভিন্ন। শহুরে বাড়ি নির্মাণে একজন উপভোক্তা মোট তিন লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার টাকা পান। এর মধ্যে রাজ্যের কোষাগার থেকে এক লক্ষ তিরানব্বই হাজার টাকা দেওয়া হয়, যা দেশের অন্য কোনও রাজ্যই দেয় না। কেন্দ্রের বরাদ্দ দেড় লক্ষ টাকা। বাকি পঁচিশ হাজার টাকা বহন করতে হয় উপভোক্তাকেই। মাথার উপর ছাদ গড়ার এই সুবিধা পেতে হলে উপভোক্তার ন্যূনতম সাড়ে তিনশো পঞ্চাশ বর্গফুট জমি থাকা বাধ্যতামূলক। কয়েক মাস আগে আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এবার পশ্চিমবঙ্গে পুরোদমে কাজ শুরু হচ্ছে। খুব শীঘ্রই সমস্ত পুরসভাকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হবে। উপভোক্তাদের যাচাই প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
যদিও এবারের বাছাইয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগ নেই, তবে আগের পর্যায়ে অনুমোদিত বাড়িগুলির নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করতে চাইছে রাজ্য। বেশ কয়েকটি পুর এলাকায় প্রায় পঁচাত্তর হাজার বাড়ির ক্ষেত্রে ঢিলেমি ধরা পড়েছে। ওই সমস্ত পুরসভাকে দ্রুত নির্মাণকাজ এগিয়ে নিয়ে জিও-ট্যাগিং সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

