প্রতিবেদন : রেলের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় আজও খামতি রয়ে গিয়েছে। বারবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেন্দ্র, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেনি। উদাসীন মোদি সরকার। কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই তাঁর রেলমন্ত্রকের। যাত্রী নিরাপত্তা ও রেল-সুরক্ষাকে শিকেয় তুলে ফের ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ২০২৫-এ এই নিয়ে দু’বার ট্রেনের ভাড়া (Train Fare) বৃদ্ধি করল ভারতীয় রেল। যার ফলে মধ্যবিত্তের পকেটে পড়বে বাড়তি চাপ। কিন্তু বাড়তি কোনও পরিষেবা মিলবে না। প্রাণ হাতে করে নিয়েই রেলযাত্রায় বেরোতে হবে যাত্রীসাধারণকে। কেননা রেলের ঘোষণায় ভাড়া বাড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনও কথা নেই। যাত্রীদের সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা না করে আয় বাড়ানোর প্ল্যান শুধু।
আরও পড়ুন-বিজিবির কবজায় বিএসএফ জওয়ান: পাচারকারীদের হাতে কিডন্যাপ রক্ষাকর্তাই
বছর শেষে এসে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া (Train Fare) বৃদ্ধি করা হল। মোদি সরকারের ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে উঠে পড়েছে প্রশ্ন। এই ভাড়া বৃদ্ধিতে আমজনতার উপর চাপ বাড়বে। তবে রেলের রোজগার বাড়বে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। মূলত দূরপাল্লা এবং এক্সপ্রেস— এই দুই ধরনের ট্রেনের টিকিটের ভাড়া বাড়ছে। এই দুই ধরনের ট্রেনের এসি ও নন-এসির সংরক্ষিত টিকিটের ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল। সংশোধিত ভাড়া অনুয়ায়ী, নন এসিতে ৫০০ কিমি পর্যন্ত যাত্রীদের অতিরিক্ত ১০ টাকা গুনতে হবে। এসির টিকিট বাবদ প্রতি কিমি দু’পয়সা করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে। নন-এসি দ্বিতীয় শ্রেণির টিকিটের ভাড়া প্রতি কিমি আধ পয়সা বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্লিপার এবং প্রথম শ্রেণির অসংরক্ষিত টিকিটের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম ছিল। নন এসি সংরক্ষিত টিকিটের ক্ষেত্রেও প্রতি কিমি পিছু দু’পয়সা ভাড়া বাড়িয়েছে রেল। যেহেতু রেলের উপরে নির্ভরশীল দেশের একটা বড়সংখ্যক মানুষ। এই ভাড়াবৃদ্ধি তাদের উপর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। যাত্রী সাধারণও রেলের এই ভাড়াবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ভাল চোখে দেখছে না। সবার আগে যাত্রী সুরক্ষা ও যাত্রী পরিষেবার উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল রেলের। সম্প্রতি বারবার রেল দুর্ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। তারপরও রেলের এই ভ্রুক্ষেপহীনতায় প্রশ্ন উঠছে।
২৬ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় রেলে টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির তীব্র নিন্দা করল তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ভারতীয় রেলের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করছি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দেখিয়েছেন যাত্রীদের উপর চাপ সৃষ্টি না করেও কীভাবে রাজস্ব আদায় বাড়ানো যায়। রেলে রক্ষণাবেক্ষণের বালাই নেই, পরিষেবার বালাই নেই, যাত্রীদের নিরাপত্তার বালাই নেই। গতকালও ট্রেনের ধাক্কায় তাহেরপুরে তিন-চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। লোকাল থেকে দূরপাল্লা, কোনও ট্রেনই নির্ধারিত টাইমে চলে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে খাবার, জলের জঘন্য অবস্থা। এতকিছুর মধ্যে এদের কোনও অধিকারই নেই ভাড়া বাড়ানোর! তৃণমূল কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা করছে!

