২০০৩ সালের ২২ ডিসেম্বর সাঁওতালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই দিনটিকেই প্রতি বছর স্মরণ করা হয়। সাঁওতালি ভাষা দিবস (Santali Language Day) উপলক্ষ্যে সাঁওতালি ভাই এবং বোনেদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন,”এছাড়াও,আমি বিনম্র চিত্তে সেই সকল সাঁওতালি (Santali Language Day) ভাষাপ্রেমী আন্দোলনকারীদের শ্রদ্ধা জানাই – যাঁদের দীর্ঘদিনের নিরলস সংগ্রাম এবং একনিষ্ঠ উদ্যোগের ফলেই এই ভাষার বিশেষ মর্যাদা লাভ সম্ভব হয়েছে।
আমাদের গর্ব সাঁওতালি ভাষাকে আমাদের সময়েই সরকারী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। WBCS পরীক্ষায় ঐচ্ছিক ভাষা হিসাবে সাঁওতালি ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অলচিকি লিপিতে পাঠ্যপুস্তক ও সাঁওতালিতে ত্রিভাষিক অভিধান প্রকাশ করা হয়েছে। সাঁওতালি ভাষায় পঠন পাঠনের জন্য নতুন নতুন স্কুল হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বলি, কুরুখ, কুড়মালি, নেপালী, হিন্দি, উর্দু, রাজবংশী, কামতাপুরি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, তেলুগু ভাষাকেও আমরা সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছি। সাদরি ভাষার মানোন্নয়নেও আমরা সচেষ্ট হয়েছি। আমরা সব ভাষাকেই সম্মান করি।”
আরও পড়ুন-৮২ শতাংশ অর্থই বিজেপির পকেটে
এছাড়াও তৃণমূল সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে সাঁওতালি-সহ সমস্ত আদিবাসীদের উন্নয়নে বহু কাজ করেছে। তার খতিয়ানও সোমবার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, “আলাদা আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর গঠন করা হয়েছে। দফতরের বাজেট বরাদ্দ ২০১১ সালের তুলনায় ৭ গুণের বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
রাজ্যে আদিবাসী মানুষের জমি হস্তান্তর করা যাবে না, তার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রায় ৩ লক্ষ আদিবাসী মানুষকে ‘জয় জোহার’ প্রকল্পে মাসে ১ হাজার টাকা পেনশন দেওয়া হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ১৯ লক্ষ এস.টি কাস্ট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে।
‘শিক্ষাশ্রী’ প্রকল্পে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেনীর প্রায় ২ লক্ষ এস.টি ছাত্রছাত্রীদের ৮০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে।
ফরেস্ট রাইট্স অ্যাক্টের অধীনে প্রায় ৪৯ হাজার আদিবাসী মানুষকে ফরেস্ট পাট্টা এবং ৮৫১টি কমিউনিটি ফরেস্ট পাট্টা প্রদান করা হয়েছে।
প্রায় ৩৬ হাজার দরিদ্র আদিবাসী কেন্দু পাতা সংগ্রহকারী মানুষের জন্য বিশেষ সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করা হয়েছে। কেন্দুপাতার জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও অনেক বাড়ানো হয়েছে।
সাতশোর বেশি জাহের থান এবং দেড় হাজারের বেশি মাঝির থানের উন্নয়ন এবং চারদিকে ফেন্সিং করা হয়েছে।
আদিবাসীদের জন্য ৮টি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সাঁওতালি একাডেমি গঠন করা হয়েছে।
সারনা/সারি ধর্মের স্বীকৃতির জন্য বিধানসভায় বিল পাশ করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আগামিদিনেও আমরা এইভাবেই আমাদের আদিবাসী ভাই-বোনেদের উন্নয়নে কাজ করে যাবো।”
মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন,”১৫ নভেম্বর ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মদিবস পালন ও সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু’র জন্মদিনে স্টেট হলিডে ঘোষণা করা হয়েছে। হুল দিবসে সেকশনাল হলিডে ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র করম পুজোতে সেকশনাল হলিডের পরিবর্তে স্টেট হলিডে ঘোষণা করা হয়েছে।”
এছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী গণিতের সীমাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা প্রতিভাবান শ্রীনিবাস রামানুজনকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করেছেন।

