বাংলাভাষী শ্রমিককে মিথ্যা অপবাদে পিটিয়ে খুন ওড়িশায়

ব্যাপক প্রহারে গুরুতর জখম হয়েছেন আরও ২ পরিযায়ী শ্রমিক। ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে সম্বলপুরে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে তৃণমূল।

Must read

প্রতিবেদন : ফের বাংলাদেশি বলে রটিয়ে দিয়ে বিজেপি-শাসিত ওড়িশায় পিটিয়ে মারা হল বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিককে। ব্যাপক প্রহারে গুরুতর জখম হয়েছেন আরও ২ পরিযায়ী শ্রমিক। ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে সম্বলপুরে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে তৃণমূল। বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। নিহত শ্রমিকের নাম জুয়েল শেখ। মুর্শিদাবাদের সুতি ১ ব্লকের বাসিন্দা। গুরুতর আহত ওঁর দুই সঙ্গী আকির শেখ ও পলাশ শেখ। জুয়েল ও কয়েকজন ওড়িশার সম্বলপুরে গিয়েছিলেন কাজে। হাসপাতালে মৃত্যু হয় জুয়েলের। বাকি দু’জন লড়াই করছেন মৃত্যুর সঙ্গে। ঘটনার নেপথ্যে বিজেপি মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা।

আরও পড়ুন-উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে উপহাস, তীব্র নিন্দা অভিষেকের

এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী শশী পাঁজা প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপি পোস্টারে লিখছে, বাংলায় বাঁচতে বিজেপি চাই! প্রধানমন্ত্রী বাংলা এসে ভাষণেও সে কথাই বলছেন! এর অর্থ কী? তারা স্পষ্ট হুমকি দিচ্ছে বিজেপি না করলে তাকে খতম করা হবে? বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ওড়িশায় বাংলাভাষী শ্রমিকের খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে বিজেপির মনোভাবের সমালোচনা করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিহত পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ এবং আহতদের কীভাবে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন।
শশী পাঁজা সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, আর কতদিন বাঙালিদের শাস্তি পেতে হবে শুধুমাত্র এই কারণে যে বাংলা বিজেপির কাছে মাথা নত করেনি? কত প্রাণ গেলে তবে থামবে এই ঘৃণার রাজনীতি? যাঁরা পরিশ্রম করেন, সম্মানের সঙ্গে কাজ করেন, নাগরিক অধিকার দাবি করেন- তাঁদের অপরাধ কি শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলা? বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বারবার বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিশানা করা হচ্ছে, আর প্রতিবারই একই অজুহাত, তাঁরা নাকি অনুপ্রবেশকারী।
ঘটনার খবর পেয়েই জুয়েলের বাড়িতে যান মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য সোহেল আহমেদ। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সামিরুল ফোনে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। জুয়েলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের আবহ। একমাত্র রোজগেরে ছেলের মৃত্যুতে পরিবারও চরম সঙ্কটে।

আরও পড়ুন-বড়দিনের ৩ বড় ছবি

তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ তথা পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানান, বিজেপির দীর্ঘদিনের বাংলা-বিরোধী প্রচারের সরাসরি ফল এই হত্যাকাণ্ড। বছরের পর বছর ধরে বিজেপি নেতারা সচেতন ভাবে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের অনুপ্রবেশকারী, বহিরাগত ও সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করে আসছেন। যেখানে সাধারণ মানুষ নিজেকে অভিবাসন আধিকারিক ও বিচারক ভাবতে শুরু করেছে। পরিণতিতে নিরীহ মানুষ খুন।

Latest article