প্রতিবেদন : ‘মানবে না হার, তৃণমূল আবার। বাঁচতে চাই, বিজেপি বাই।’ ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন স্লোগান বেঁধে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মোদির বঙ্গ সফরে বলা একটি লাইন তুলে অভিষেক বলেন, ওরা বলেছে বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই। এটি বড় সাঙ্ঘাতিক লাইন। এর মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আসলে বিজেপি মারতে চাই, তাই বাঁচার কথা বলছে। কিন্তু আমরা বলছি, বাঁচতে চাই, বিজেপি বাই। তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে সকলে বাঁচবে। ২০২৯-এর ভিত ২০২৬। একই সঙ্গে দলীয় সতীর্থদের স্মরণ করালেন— দল যে কর্মসূচি তৈরি করে দিচ্ছে তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। অভিষেকের কথায়, এটা যুদ্ধের সময়, কোনও আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। দলীয় কর্মসূচিতে এতটুকু শিথিলতা যেন না আসে। বিজেপি কতটা নিচে নামতে পারে তা আপনারা দেখেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই দিচ্ছে, জিতছে। বাকিরা হারছে। শুক্রবার বিকেলে প্রায় ১৫ হাজার পদাধিকারীকে নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (Abhishek Banerjee)। সেখানে আগামী ৪৫ দিনের জন্য দুটি নয়া কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন— ১. বাংলার সমর্থনের সংযোগ, ২. উন্নয়নের সংলাপ। এটি বুথস্তরের জনসংযোগ কর্মসূচি। এছাড়া রয়েছে পাড়ার সংলাপ। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে পাশে নিয়ে অভিষেক এই কর্মসূচিগুলি ব্যাখ্যা করে দেন। তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড পাঁচালির আদলে তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একে সর্বস্তরে প্রচারে নিয়ে যেতে হবে। কীভাবে?
১. বাংলার সমর্থনের সংযোগ এই কর্মসূচিতে রাজ্যস্তরের ২০০ জন এবং জেলাস্তরের ১৬০০ জনের প্রভাবশালীর একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এঁদের কাছে যেতে হবে। যার জন্য টিম তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে।
- প্রতিটি বিধানসভায় ৩টি করে টিম। একটি টিমে অন্তত ৫ জন করে থাকবেন। মোট ৩৮টি টিম তৈরি হয়েছে। এখানে বিধায়ক, সাংসদেরাও থাকবেন।
- ১ জানুয়ারি থেকে কর্মসূচি শুরু হবে। ৩০ দিনের মধ্যে শেষ হবে।
- ইনফ্লুয়েনসারদের কাছে একটি করে কিট নিয়ে যেতে হবে। যা দল পাঠিয়ে দেবে।
- কিটে থাকবে একটি উত্তরীয়, একটি ফাইল যার মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি (ইংরেজি এবং বাংলা)। একটি রির্পোট কার্ড। যেখানে সরকারের ১৫ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান থাকবে। সঙ্গে একটি মেমেন্টো। রিপোর্ট কার্ডের পিছনে রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলির বিস্তারিত খতিয়ান থাকবে।
- পাঁচালির আদলে একটি বই তৈরি হয়েছে। সেটিও ইনফ্লুয়েনসারদের হাতে তুলে দিতে হবে। আগামী চারদিনের মধ্যে ১৮০০ কিট সকলে পেয়ে যাবেন।
- বিনয়ের সঙ্গে ইনফ্লুয়েনসারদের সঙ্গে কথা বলবেন। আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে যাচ্ছেন। কোনও রকম ঔদ্ধত্য, দম্ভ, অহংকার যেন না থাকে। আপনার মধ্যেই যেন ইনফ্লুয়েনসার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই সংগ্রাম দেখতে পান।উন্নয়নের সংলাপ— বুথস্তরের জনসংযোগ কর্মসূচি
- প্রতিটি বিধানসভায় তিনটি করে আলাদা দল হবে। একেক দিন পুরো গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা দলটি কভার করবে।
পাড়ার সংলাপ কর্মসূচি - প্রত্যেকদিন ৪টি করে বুথে কর্মসূচি হবে। এর মিনিট-টু-মিনিট শিডিউল দিয়ে দেওয়া হবে।
- এই কর্মসূচিতে ২০১১-র আগে বাংলার করুণ অবস্থা থেকে আজকের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞের বাংলা— এর সবটা মানুষকে বলতে হবে।শেষ পর্বে উন্নয়নের চলচ্চিত্র দেখাতে হবে— উন্নয়নের পর্ব
- ৪৫ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি এলইডি স্ক্রিনে দেখানো হবে। এরপর একটি ছোট্ট খাওয়াদাওয়ার আয়োজন থাকবে।
- বিএলএ ২-রা গত দু’মাসে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে তাঁদের জন্য উত্তরীয়, নোটবুক, পেন, পকেট ক্যালেন্ডার ও একটি চিঠি থাকবে) এটুকু ওদের প্রাপ্য।
- গোটা কর্মসূচির দেখভালের জন্য ২-৩টি বিধানসভা ধরে একজন করে কো-অর্ডিনেটর অ্যাপয়েন্ট করবে দল। যাঁরা আমাদের চোখ-কান হয়ে এই কর্মসূচির ওপর নজর রাখবেন। এর তালিকাও জানিয়ে দেওয়া হবে।
- দিনভর কর্মসূচির মাঝে মধ্যাহ্নভোজ হবে দলীয় কর্মীর বাড়িতে। কোনও হোটেলে বা অন্য কোথাও নয়। স্থানীয় স্তরেই তা আয়োজন করতে হবে।
- দলের পুরনো কর্মীদের মান-অভিমান ভাঙিয়ে তাঁদের পাড়ার সংলাপ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করাবেন। কেউ দলে যোগ দিতে চাইলে তাঁকে যোগদান করাবেন। এলাকার স্থানীয় গুণিজনদের শ্রদ্ধা ও সম্মানজ্ঞাপন হবে। এরপর ছোট পদযাত্রা বা রাজনৈতিক সভা করে আরও একবার সবটা মানুষকে বলতে হবে।
আরও পড়ুন- ওড়িশায় নৃশংস খুন, ফিরল শ্রমিকের দেহ

