প্রতিবেদন : শুনানির নামে রাজ্য জুড়ে চরম হেনস্থার শিকার অসুস্থ প্রবীণ থেকে বিশেষভাবে সক্ষম বয়স্করা। শনিবার থেকে শুরু হওয়া শুনানি-প্রক্রিয়ায় বয়স্কদেরও যেকোনও পরিস্থিতিতে শুনানি কেন্দ্রে হাজিরা নিয়ে কমিশনের তুঘলকি ফতোয়ায় রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেসও বয়স্ক ভোটারদের এই চূড়ান্ত হয়রানির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এমনকী, কমিশনের কাছে বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অসুস্থদের জন্য বাড়ি-বাড়ি গিয়ে শুনানির দাবি জানিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। একদিকে তৃণমূলের ব্যাপক চাপ ও অন্যদিকে রাজ্য জুড়ে প্রবল নিন্দা-প্রতিবাদের সামনে অবশেষে মাথা নত করল কমিশন। চাপে পড়ে এবার প্রবীণদের শুনানি নিয়ে নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বাধ্য হল নির্বাচন কমিশন।
সোমবার কমিশনের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হল, রাজ্যে এসআইআর-প্রক্রিয়ায় বয়স্ক ও অসুস্থ ভোটারদের শুনানিতে হাজির হতে বাধ্য করা যাবে না! কমিশনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এক্স মাধ্যমে অভিষেকের বার্তা, তৃণমূল কংগ্রেস বরাবরই জনস্বার্থ বিষয়গুলিকে গঠনমূলক ও দায়িত্বশীলভাবে তুলে ধরেছে। আজ আমাদের প্রতিনিধি দল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছে এবং পরবর্তীতে সাধারণ মানুষের স্বস্তির জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। কমিশনের কাছে আমাদের সম্মানপূর্বক আবেদন, প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে যেন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়— বিশেষ করে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে যাঁরা বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। আশা করি, অযথা ভোগান্তিতে না ফেলে এই মানুষদের শুনানি থেকে রেহাই দেওয়া হবে। মানবিকতাই সর্বদা আমাদের পথপ্রদর্শক হওয়া উচিত।
কমিশনের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ৮৫ বছর বা তার বেশি বয়সি ভোটার, গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তি এবং বিশেষভাবে সক্ষম ভোটারদের ক্ষেত্রে বিশেষ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে। নির্দেশে বলা হয়েছে, এই ভোটাররা নিজেরা বা তাঁদের হয়ে কেউ অনুরোধ জানালে, তাঁদের শুনানিতে ডাকা হবে না। ইতিমধ্যেই যদি কোনও নোটিশ জারি হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ভোটারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে শুনানিতে না আসার অনুরোধ জানানো যেতে পারে। যাচাই প্রক্রিয়া প্রয়োজনে তাঁদের নিজ নিজ বাসভবনেই সম্পন্ন করা হবে। এই বিজ্ঞপ্তি আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের নৈতিক জয়। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্য প্রথম থেকেই বাংলার মানুষের জন্য চিৎকার করে বলেছিলেন, এই অন্যায় মানব না! অবশেষে জয় এল। নতজানু হল কমিশন।

