এসআইআর প্রক্রিয়ায় এআই ব্যবহার করে প্রায় ৫৪ লক্ষ মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার সভা থেকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোর দাগলেন তৃণমূল (TMC) সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের দফতরের মধ্যেই বিজেপির আইটি সেলের কর্মীরা বসে কাজ করছে।
দরজায় কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন। সব রাজনৈতিক দলের নজর সেদিকে। সাংগঠনিক বৈঠকের নাম ভোট প্রচারে বাংলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন তিনি সাংবাদিক বৈঠক থেকে বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলায় সরকার প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি। এর পরেই বড়জোড়ার সভা থেকে নাম না করে শাহকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ”ইউ মাস্ট রিজাইন। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনি পদত্যাগ করুন। বলছেন, দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে জিতবেন। এবার তো বলছেন না, ‘আব কি বার/২০০ পার।’ আমি বলতে চাই, এবার আপনাকে দেশ থেকে বার। আবার বাংলার ক্ষমতায় এসে গণতান্ত্রিকভাবে দেশ থেকে বার করে দেব।” নাম না করে অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভোট এলেই ওরা সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে। কিন্তু সোনার বাংলা নয়, ওরা ধ্বংসের বাংলা গড়তে চায়।”
এসআইআর নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও বিজেপিকে একতিরে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বলেন, “দিল্লিতে কমিশনে বিজেপির আইটি সেলের লোক বসে রয়েছেন, ইআরওদের নামে মিথ্যা কথা বলে এআই দিয়ে ৫৪ লক্ষ নাম বাদ দিয়েছে।” তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, “দিল্লিতে কমিশনে বিজেপির লোক বসে আছেন। তিনি ইলেকশন কমিশনের অফিসে বসে ইআরওদের নামে মিথ্যে কথা বলে, ওই নামগুলো নাম বাদ দিয়েছে। ইআরওদের অ্যাসোসিয়েশন চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ওরা এই কাজ করেনি।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানান, “এগুলি ছেড়ে দেবেন না। এটা আপনাদের অধিকার। না হলে ঘিরে বসে থাকবেন।”
আরও পড়ুন- দলে অহংকারী, ইগো আছে এমন লোককে রাখব না, সাফ বার্তা দলনেত্রীর
নাম বাদ যাওয়া নিয়ে উদাহরণ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”কারও পদবি সিংহ। ইংরেজিতে সেটা সিনহা হয়। ব্যস নাম বাদ।” এই বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের পরিবারের লোকেদের হিয়ারিং-এ ডাকার বিষয়টিও তোলেন তৃণমূল সভানেত্রী। অভিযোগ করেন, বিএলএদের হিয়ারিং রুমে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কোন আইনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে? প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
”ভ্যানিশ কুমার ঘরে বসে নাম কাটছে। নিজের পরিবার গোছানোর জন্য বিজেপির দালালি?”- অভিযোগ তৃণমূল সুপ্রিমোর। কমিশনের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”লিখিত নির্দেশিকা দিন। হোয়াটসঅ্যাপ করছে। হোয়াটসঅ্যাপের কোনও ভ্যালু নেই। আমি আদালতে যাব। জনতার ও মানুষের আদালতে সওয়াল করব।” ভোটারদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, “৫৪ লক্ষে নাম বাদ গিয়েছে। তারা ৭ ও ৮ নম্বর ফর্ম ফিলআপ করবেন। এটা আপনার অধিকার।”
তৃণমূল সভানেত্রী জানান, ”এসআইআরের জন্য যে ৫৭ জন মারা গিয়েছেন, সবার নামে শহিদ বেদি হবে জেলায় জেলায়। অর্ধেক হিন্দু মারা গিয়েছেন, অর্ধেক মুসলমান মারা গিয়েছেন। আদিবাসীও মারা গিয়েছেন, তফসিলিও মারা গিয়েছেন।”

