প্রতিবেদন : রাজ্য সরকার ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য ১০ লক্ষ সাইকেল কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুল এবং মাদ্রাসায় পাঠরত নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ওই সাইকেল বিতরণ করা হবে। ছাত্র-ছাত্রী উভয়েই এই প্রকল্পের আওতায় থাকবেন।
মোট ১০ লক্ষ সাইকেলের প্রয়োজনকে দু’টি পৃথক লটে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি লটে থাকছে ৫ লক্ষ করে সাইকেল। নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণকারী ভারতীয় প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকেই এই সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হবে। টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির পর্যাপ্ত আর্থিক সক্ষমতা, বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা এবং এর আগে সরকারি সংস্থাকে সাইকেল সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। নির্বাচিত সংস্থাগুলির সরবরাহ করা সাইকেলগুলিকে বাধ্যতামূলক গুণমান সংক্রান্ত সমস্ত মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। বিশেষ করে ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের শংসাপত্র থাকা আবশ্যিক করা হয়েছে। এককালীন বিপুল পরিমাণ সরবরাহ শুরুর আগে প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির দেওয়া নমুনা সাইকেল প্রযুক্তিগত কমিটি পরীক্ষা করে দেখবে। নির্ধারিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হলেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন-ডনের টুপি নিলামে
এছাড়াও টেন্ডারে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, সাইকেল সরবরাহের পাশাপাশি বিক্রয়োত্তর পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে। জেলা ও পুরসভা এলাকায় যেখানে সাইকেল দেওয়া হবে, সেখানে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিষেবা কেন্দ্র বা সহায়তা ব্যবস্থাও রাখতে হবে। সরবরাহকালীন সময়ে যাতে কোনও পড়ুয়া সমস্যায় না পড়েন, সেই কারণেই এই শর্ত রাখা হয়েছে।
ভৌগোলিকভাবে রাজ্যের ৩৩৪টি ব্লক এবং ১২৫টি পুরসভা এলাকায় এই সাইকেল সরবরাহ করা হবে। কলকাতা পুরসভা এলাকা এই প্রকল্পের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকাকেও এই সরবরাহ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সরবরাহ সূচি অনুযায়ী, কাজের নির্দেশ জারি হওয়ার তিন মাসের মধ্যে সাইকেল সরবরাহ সম্পূর্ণ করতে হবে। যদিও প্রয়োজনে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ এই সময়সীমা বাড়াতে পারে। ব্লক এবং পুরসভা স্তরে নির্ধারিত স্থানে সাইকেল পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও টেন্ডারে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, উচ্চশিক্ষার প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়ানো এবং স্কুলছুটের সংখ্যা কমানো। প্রশাসনিক মহলের মতে, ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প সেই লক্ষ্যপূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে। এই প্রকল্পের নামকরণ এবং লোগোর ভাবনাও এসেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর মাথা থেকেই। দার্জিলিং থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরের পথে যাত্রাকালীনই তাঁর মনে আসে ‘সবুজ সাথী’ নামটি এবং তিনিই প্রকল্পের লোগোর নকশা তৈরি করেন।

