শিলচর: বাংলায় কথা বলায় আবার বাংলাদেশি তকমা দিয়ে বিজেপি রাজ্যে গণনির্যাতন মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিককে। ওড়িশার পরে এবারে অসমে। রবিবার সকালে শিলচরের কনকপুরের রাস্তায় ফেরি করছিলেন মুর্শিদাবাদের সুতি থানার নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা রিঙ্কু শেখ। প্রথমে পথ আটকে তাঁকে মোটরবাইক থামাতে বাধ্য করে কয়েকজন। তাঁর কাছে দেখতে চাওয়া হয় আধার কার্ড। রিঙ্কু শেখ তা দেখানো সত্ত্বেও বাংলায় কথা বলার জন্য ‘তুই বাংলাদেশি’ বলে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে কয়েকজন। বিনা প্ররোচনায় তাঁর উপরে নির্বিচারে চলে চড়-ঘুসি-লাথি। সঙ্গে ধর্মীয় স্লোগানও। মোটরবাইকটি ফেলে রেখে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে সেখান থেকে ছুটে পালান আক্রান্ত রিঙ্কু। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান নিরাপদ স্থানে।
আরও পড়ুন-শহরে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার গ্রেফতার বিজেপি ঘনিষ্ঠ
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, হামলাকারীরা বিজেপির দোসর বজরং দলের। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কাউকেই এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ঘটনার খবর পেয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এই হামলার তীব্র নিন্দা করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য সুস্মিতা দেব। আক্রমণকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ দাবি করে কাছাড়-শিলচরের সিনিয়ার এসপিকে চিঠি লেখেন সুস্মিতা দেব। জানান রাধামাধব রোড পয়েন্টে কীভাবে হামলার শিকার হয়েছেন স্থানীয় চামড়াগুদাম এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দা রিঙ্কু। আক্রান্ত রিঙ্কু-সহ দু’জনকে বিমানে বাংলায় ফেরার ব্যবস্থা করেন। বাকি পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার জন্য ট্রেনের টিকিটেরও ব্যবস্থা করে দেন।
ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটা? আক্রান্ত রিঙ্কু শেখের কথায়, রবিবার সকালে প্রথমে দু’জন লোক আমার বাইক থামায়। বলে, বাংলাদেশি পেয়েছি। আমাকে উদ্দেশ্য করে শুরু করে অকথ্য গালিগালাজ। ক্রমে সংখ্যাটা বাড়তে বাড়তে প্রায় ১২ জন মিলে আমাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। দিতে থাকে ধর্মীয় স্লোগান। আঘাত করে আমার গোপনাঙ্গে। প্রাণে বাঁচতে বাইক ফেলে রেখেই দৌড়ে শিলচর সদর থানায় ঢুকে পড়ি। কিন্তু তারা অভিযোগ নিতে চায়নি। পরে রঙ্গিরখারি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। ২৯ বছরের রিঙ্কু বললেন, ৭-৮ বছর ধরে নিয়মিত ফেরি করছি শিলচরে। এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা কখনও হয়নি। ছোট ভাইকে নিয়ে খুবই আতঙ্কে রয়েছি। ধন্যবাদ সাংসদ সুস্মিতা দেবকে। তিনি আমাদের মুর্শিদাবাদে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

