ত্রিপুরায় (Tripura) বিজেপির (BJP) গুন্ডাদের হাতে আহত হয়ে কলকাতায় চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত, আগরতলার (Agartala) তৃণমূল (TMC) নেতা মজিবুর ইসলাম মজুমদার (৫৭)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগরতলায় গেলেন তৃণমূল নেতা তথা বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। আগরতলা বিমানবন্দর থেকে প্রয়াত নেতার মরদেহ নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব প্রথমে পৌঁছায় ভগবান ঠাকুর চৌমোহনী সংলগ্ন দলীয় ক্যাম্প অফিসে। উপস্থিত ছিলেন সুবল ভৌমিক সহ স্থানীয় নেতৃত্ব। সকলে পুষ্পস্তবক ও মালা দিয়ে চোখের জলে প্রিয় সহকর্মীকে শেষশ্রদ্ধা জানান। পরিবারের হাতে তাঁর মৃতদেহ ও আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়েছেন তারা দায়িত্ব সহকারে।
আরও পড়ুন-মাস্ক-এ স্বনির্ভর সুচিত্রা
ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূলের স্টিয়ারিং কমিটির কনভেনর সুবল ভৌমিক জানান, আজ রাতে আগরতলাতেই মজিবুর ইসলাম মজুমদারের মৃতদেহ থাকবে। আগামিকাল, শুক্রবার সকাল ৯ টায় শোক মিছিল করে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাধারঘাটের বাসভবনে। সেখানে তাঁর পরিবারের লোকেরা থাকবেন। প্রয়াত মজিবুর পেশায় একজন আইনজীবী ছিলেন। তাই বাড়ি থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে তৃণমূল নেতার মরদেহ। সেখানে বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানাবেন আইনজীবীরা। আদালত থেকে সোনামুড়ায় তাঁর পৈতৃক ভিটেতে নিয়ে যাওয়া হবে প্রয়াত তৃণমূল নেতার মরদেহ। সেখানে গ্রামের প্রতিবেশি ও আত্মীয় পরিজিনেরা শেষশ্রদ্ধা জানানোর পর মজিবুর ইসলামের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে শুক্রবার বিকেলে। প্রতিটি মুহূর্তের খবরাখবর রাখছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-দিনাজপুরে শক্তিশালী মহিলা ব্রিগেড ‘বঙ্গজননী’
গত কয়েক মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত চলে যেতে হয় ত্রিপুরা তৃণমূলের স্থানীয় নেতা মজিবর ইসলাম মজুমদারকে (Mojibur Islam Majumder)। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলার পর গত, বুধবার সকালে কলকাতার SSKM হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মজিবর।
গত ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ত্রিপুরায় মজিবর ইসলাম মজুমদারের বাসভবনে এক
কর্মসূচির আয়োজন করে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন। খবর পেয়ে বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তরা মজিবর ইসলাম মজুমদারের
বাড়িতে চড়াও হয়। মজিবর সহ ৩ জন তৃণমূল কর্মী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলায়
গুরুতর জখম হয় মজিবর ইসলাম মজুমদার এবং ছাত্রনেতা শুভঙ্কর মজুমদার। এরপর দু’জনকেই কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন-২৫০ বাস্তুহীন পরিবারকে ঘর
মজিবুর ইসলাম মজুমদারকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় সেই সময় তাঁর অস্ত্রোপচার করা যায়নি। এরপর রক্তে শর্করার পরিমাণ কিছুটা কমলে তাঁকে ফের ১৮ ডিসেম্বর এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অস্ত্রোপচারও হয়।
শুভঙ্কর মজুমদার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন, কিন্তু মজিবরের আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে বহু চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না। তরতাজা এই নেতার মৃত্যু শোকের ছায়া নেমে এসেছে ত্রিপুরায়।