প্রতিবেদন : করোনাজনিত কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যথেষ্টই খারাপ। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। বেশিরভাগ মানুষেরই আয় উদ্বেগজনক ভাবে কমেছে। ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও ব্যয়বহুল সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের কাজ থামায়নি নরেন্দ্র মোদি সরকার। এই প্রকল্পে রাজধানীর সৌন্দর্যায়ন ও সরকারি ভবনগুলি নতুন করে তৈরির কর্মযজ্ঞ অব্যাহত। চলছে বহু প্রচারিত নতুন সংসদ ভবন তৈরির কাজও। করোনা মহামারীর মধ্যে পরিবেশের ক্ষতি করে বিরাট ব্যয়বহুল প্রকল্প চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দেশ জুড়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
পরিবেশ ধ্বংস করে নতুন সংসদ ভবন (The Parliament of India) তৈরির জন্য গ্রিন ট্রাইবুনালও তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সব আপত্তি উড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের সবুজসংকেত নিয়ে সেন্ট্রাল ভিস্তায় নতুন সংসদ ভবন তৈরির কাজ শুরু করেছে মোদি সরকার।
আরও পড়ুন – মোদি সরকারের ‘কো উইন’ থেকে তথ্য ফাঁসের অভিযোগে চাঞ্চল্য
২০২০ সালের ডিসেম্বরে নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। সেই সময় নতুন ভবন তৈরির জন্য খরচ ধার্য করা হয়েছিল ৯৭৭ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২২-এর শুরুতে এসে দেখা যাচ্ছে নতুন সংসদ ভবন তৈরির জন্য যে পরিমাণ খরচ হবে বলে মনে করা হয়েছিল প্রকৃত খরচ হচ্ছে তার থেকে অন্তত ২৯ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে যা বাড়তি ২৮২ কোটি টাকা।
ইতিমধ্যেই নতুন সংসদ ভবনের প্রায় ৪০ শতাংশ নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পুরো কাজটি শেষ করতে আরও ২৮২ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। অর্থাৎ নতুন সংসদ ভবন তৈরি করতে ৯৭৭ কোটি নয়, খরচ হতে চলেছে ১২৫০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, ১৩ একর জমির উপর চারতলা সংসদ ভবনটি তৈরি করছে টাটা গ্রুপ। নতুন সংসদ ভবনে একসঙ্গে ৮৮৮ জন বসতে পারবেন।
দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশন হলে উপস্থিত থাকতে পারবেন ১২২৪ জন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার স্বাধীনতা দিবসের আগেই নতুন সংসদ ভবনের তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে মনে করা হচ্ছে অক্টোবর মাসের আগে পুরো ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে না।
করোনাজনিত কারণে দেশের প্রায় সর্বত্রই সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু সংসদ ভবন (The Parliament of India) নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়নি। তবে যেভাবে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে এই নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রথম থেকেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। এর মধ্যে আবার খরচের পরিমাণ আরও বাড়ায় তা নিয়ে বিতর্ক বাড়ল।