দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া বিক্ষুব্ধ দুই বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারি সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন। বেআব্রু করে দিলেন বিজেপির অন্দরমহলকে। বাংলা দখল করতে মরিয়া বানিয়া পার্টি বিজেপি যে আসলে ভিতর থেকে কতবড় নড়বড়ে তার কঙ্কালসার চেহারাটা সবার সামনে উন্মুক্ত করে দিলেন বঙ্গবাসীর সামনে।
মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদিকদের মুখোমুখি হয়ে বর্তমান রাজ্য বিজেপিকে ধুয়ে দিয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে এই মূহুর্তে দেশের মধ্যে সব থেকে কুশলী ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাজনীতিবিদ বলে মনে করা হয়। আর তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করতে যারা নেমেছে তাদের সম্মীলিত রাজনীতির বয়স পাঁচ বছরেরও কম। মেসির বিরুদ্ধে তিনদিন প্রাকটিস করেই কী আর খেলতে নামা যায় নাকি উচিৎ।
আরও পড়ুন – অভিষেকের নির্দেশে বেলেঘাটায় আক্রান্ত আইনজীবীর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন আইনজীবীরা
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ১৮ টা আসন এনে দিয়েছিল যারা তাদের সরিয়ে বাইরে থেকে নেতা এনে ২১ এর বিধানসভা ভোট লড়ার ফল এখন সকলে জানে। তৃণমূল কংগ্রেস বারে বারে এই বহিরাগত নেতাদের কথাই বলে এসেছে। যাকে এদিন জয়প্রকাশ (Joyprakash Majumder) ও রীতেশ কার্যত সিলমোহর দিয়ে গেলেন। বিধানসভা নির্বাচনে হারার পরেও তা নিয়ে দলের অন্দরে কোনো পর্যালোচনা হল না। অনেকবার কেন্দ্রীয় দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে এনিয়ে বলতে গেলে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে নয়তো আইটির লোকজনকে বলে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের পরে বাংলায় বিজেপি কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো তো দূর বহিরাগত নেতারা পালিয়ে গেছেন। বার বার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বলললেও তারা এবিষয়ে কান দেননি।
আর এক বিক্ষুব্ধ নেতা রীতেশ তিওয়ারির প্রশ্ন, , বলা হয়েছে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তদন্ত করবে। যেখানে বর্তমান বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সব কমিটি ভেঙে দিয়েছেন সেখানে কারা করবে তদন্ত। আর তদন্তের আগেই বরখাস্ত? এটা হয় নাকি? জয়প্রকাশ মজুমদারের প্রশ্ন? দলের সংবিধান অনুযায়ী, কাউকে শাস্তি দিতে গেলে দলের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডেকে সকলের মতামত নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এক্ষেত্রে তা হয়নি।
রীতেশ তিওয়ারি ও জয়প্রকাশ মজুমদার (Joyprakash Majumder) দুজনেই চ্যালেঞ্জ করেছেন, যে বক্তব্যের জন্য বিজেপি তাদের প্রথমে শোকজ ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সেই বক্তব্য তারা সর্বসমক্ষে আনুন। দুজনের কথায়, এরা কোনোদিনই তা পারবেন না। রীতেশ তিওয়ারি বলেন, ভার্চুয়াল চক্রবর্তী ও টুইট মালব্য দলটাকে শেষ করে দিচ্ছেন। জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, জেলায় যারা সভাপতি হয়েছেন তাদের সেই জেলার বিজেপির লোকজনই চেনে না। ওরা বরখাস্ত আর বহিস্কৃতর মধ্যে তফাৎ জানে না। আমরা বিজেপির চাকরি করি না যে বরখাস্ত করবে।
এদিন বিকেলে কলকাতা প্রেস ক্লাবে বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে জয়প্রকাশ ও রীতেশের দাবী তারা বিজেপিতেই আছেন। তবে এর শেষ দেখে ছাড়বেন।