নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : কেন্দ্রীয় বাজেট অন্তঃসারশূন্য ও একপেশে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও বেকারদের জন্য কোনও দিশা নেই এই বাজেটে। বয়স্কদের জন্যও কোনও ঘোষণা নেই। শুধুমাত্র দেশের পুঁজিপতিদের তুষ্ট করতে কর্পোরেট ট্যাক্স ছাড় দিয়ে বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাজেটের কড়া সমালোচনা করে বলল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)।
সংসদে বাজেট পেশের পরই এনিয়ে সরব হন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) সাংসদরা। দলের রাজ্যসভার প্রবীণ সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, সাধারণ মানুষকে সবদিক দিয়ে ফাঁকি দিয়ে, শুধুমাত্র কয়েকজন পুঁজিপতি মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করে এই বাজেট বানানো হয়েছে। আমজনতার করের টাকায় রেল, সড়ক বানিয়ে তারপর তুলে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি শিল্পগোষ্ঠীর হাতে। তাঁর কথায়, ইতিমধ্যেই বিমানবন্দর বেসরকারীকরণ করা হয়ে গিয়েছে। রেল, সড়কেরও একই অবস্থা। ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের পথে। তাহলে আমাদের দেশের সম্পদ আর কী বাকি থাকল? তৃণমূলের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদি সরকার কিছু ব্যক্তিবিশেষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এই বাজেট বানিয়েছে। আর দেশের সম্পদ একের পর এক সেইসব গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সুখেন্দুবাবু বলেন, আর্থিক বৈষম্যের কারণে প্রতিদিন ২১ হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। অক্সফ্যামের রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে কীভাবে দেশে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য বাড়ছে। দেশের মাত্র কয়েকটি পরিবারের হাতে পুঞ্জীভূত হয়েছে সিংহভাগের মিলিত সম্পদের চেয়েও বেশি অর্থ। এই বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য নয়। এটা হল শেয়ার মার্কেটের বাজেট। একশ্রেণির লোকের তুষ্ট করার বাজেট। সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, বাংলার ন্যায্য পাওনা থেকে কেন্দ্র আমাদের বঞ্চিত করেছে। জিএসটির বকেয়া পাওনা দেয়নি। এখন নির্বাচনের মুখে কিছু সস্তা চমকের কথা শোনাচ্ছে। ৭৫ বছরের ইতিহাসে সব থেকে জঘন্য বাজেট এটা।
আরও পড়ুন – একনজরে কেন্দ্রীয় বাজেট
বাজেটের সমালোচনায় একই সুর দলের লোকসভার প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের কথাতেও। ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষের ওপর আঘাত হেনেছে সরকার। মিড ডে মিলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে, অথচ সেখানে কোনও বরাদ্দ নেই। দলের আরও এক সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েনের কটাক্ষ, বোঝাই যাচ্ছে হীরে নিয়ে যত চিন্তা এই সরকারের। কৃষক, মধ্যবিত্ত, দৈনিক উপার্জনকারী, বেকার এঁদের কথা আমাদের প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেন না। এদিকে এবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলার রাজ্যপাল বদলের দাবি তুললেন সাংসদ সৌগত রায়। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায়নি।