কলকাতার স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মানুষের নাগালের মধ্যে এনে দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। কলকাতা পুরসভা (KMC) এবং স্বাস্থ্য ভবন- (West Bengal Government) রাজ্য প্রশাসনের তিনটি স্তম্ভ ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।
অধিকাংশ নাগরিক চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভর করেন। কিন্তু সব সময় সবাই সঠিক সময়ে সেই সুযোগ পান না। কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ক্রমশই রোগীর ভিড় বাড়ছে। আবার এর মধ্যে একটা অংশ আছেন যাঁদের বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নেওয়ার আর্থিক ক্ষমতা নেই। কিন্তু উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগও তাঁদের প্রয়োজন, এই সব কিছুকে মাথায় রেখে খাস কলকাতায় শুরু হচ্ছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হেলথ ওয়েলনেস সেন্টার। যাঁরা শয্যাশায়ী অথবা নিতান্ত শিশু বা গর্ভবতী- দীর্ঘ সময় হাসপাতালের আউটডোরে অপেক্ষা করতে পারবেন না তাঁদের জন্য পাড়াতেই টেলিমেডিসিন প্রকল্প শুরু করছে রাজ্য সরকার।
রাজ্য স্বাস্থ্য (West Bengal Government) অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীর বলেন, “গ্রামের নাগরিকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ পেয়ে সুস্থ হয়েছেন অগণিত মানুষ। এবার সেই মডেল কলকাতা মহানগরীতে।” স্বাস্থ্য ও পুরসভা সূত্রে খবর, সুডা (স্টেট আরবান ডেভলপমেন্ট অথরিটি) ইতিমধ্যেই মোট ৩২৪ টি এলাকা চিহ্নিত করেছে। পুরসভা চিহ্নিত করেছে ৫৯ টি এলাকা। স্বাস্থ্য ভবনের তথ্য বলছে চলতি আর্থিক বছরে শহরে এমন ৭৬ টি পলিক্লিনিক তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সপ্তাহে তিনদিন মেডিসিন, স্ত্রী ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ সপ্তাহে দু’দিন রোগী দেখবেন। এ ছাড়াও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পালা করে রোগী দেখবেন। রোগীর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় প্রেসক্রিপশন পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকেই নিখরচায় ওষুধ মিলবে। যেমনটা পাওয়া যায় জেলার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। আর যেসব রোগীর রক্তপরীক্ষা, ডিজিটাল এক্স-রে, ইসিজি, রেনাল বা লিভারের বিভিন্ন পরীক্ষা প্রয়োজন হবে তাঁরা এলাকার পলিক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করতে পারবেন। আর এর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে হবে না। সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকেই সব ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এছাড়াও যদি কোনও রোগীকে হাসপাতালে ভরতি হতে হয় অথবা জরুরি অস্ত্রোপচার দরকার হয় সেই ব্যবস্থাও তৈরি করেছে তিন সংস্থা। কলকাতা, আসানসোল এবং উত্তর ২৪ পরগনার নিমতায় তিনটি মিনি নতুন হাসপাতাল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। ২০-৫০ শয্যার এমন মিনি হাসপাতালে সব আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা থাকবে। সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ কমাতেই এই পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের।