নয়াদিল্লি : সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ এবং সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের নিরিখে সবার উপরে রয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তর প্রদেশ। ‘কমিটি এগেনস্ট অ্যাসল্ট অন জার্নালিস্ট’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার যে চিত্র প্রকাশ পেয়েছে, তা ভয়ঙ্কর। ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখনও পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে মোট ১৩৮টি সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা সামনে এসেছে। এর মধ্যে ১২ জন সাংবাদিকের হত্যার ঘটনাও রয়েছে। যদিও সংখ্যাটা প্রকৃতপক্ষে এর চেয়ে অনেক বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে। দিন কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) ভোটারদের উদ্দেশে বলেছিলেন, বিজেপিকে ভোট না দিলে উত্তরপ্রদেশের অবস্থা জম্মু-কাশ্মীরের মতোই হবে। অথচ ঘটনা হল বিজেপির জমানাতেই সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ এবং সাংবাদিকদের উপর উৎপীড়নের মামলায় জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে একই আসনে স্থান পেয়েছে উত্তরপ্রদেশও।
আরও পড়ুন – গোঁজ প্রার্থীদের ভোট নয় : ফিরহাদ
যোগী সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদে সবচেয়ে বেশি ৭৫ শতাংশ হামলার ঘটনা ঘটেছে করোনার সময়ে। ১২ জন সাংবাদিক হত্যার পরিসংখ্যানও প্রকাশ পেয়েছে এই সময়ে। সাংবাদিকদের উপর হামলাগুলিকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে— খুন, শারীরিক হামলা, ‘বিচার বা গ্রেপ্তার’ এবং হেফাজত বা হুমকি বা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ।
২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় থেকে এখনও পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে মোট ১২ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, ৪৮ জনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে এবং ৬৬ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের যে ক’টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছিল তার বেশিরভাগই ছিল ২০১৯ সালের শেষের দিকে। অর্থাৎ যখন দেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়েছিল। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া থেকে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তার প্রতিধ্বনি উত্তরপ্রদেশের আজমগড় থেকে আলিগড় পর্যন্ত ছড়ায়। আর এই সময়ে,আন্দোলনের খবর করতে গিয়ে লাগাতার হেনস্থার মুখে পড়তে হয় সাংবাদিকদের। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশেই প্রথম সাংবাদিকদের ধর্ম ও পরিচয়পত্র জানিয়ে রেহাই পেতে হয়েছিল বলে রিপোর্টে প্রকাশ। এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেত্রী নিধি যাদব জানান, যোগী আদিত্যনাথের শাসনকালে শুধুমাত্র যে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে তাই নয়। মহিলা, দলিত, কৃষক, ছাত্র থেকে যুবসমাজ কেউই মুখ খুলতে পারেন না এখানে। এটাই বিজেপির সংস্কৃতির নমুনা।