প্রতিবেদন : বিশ্বজুড়ে দাবি উঠছে, অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ হোক। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় দিনেই বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যু উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। রুশ হানায় ইউক্রেনের সাজানো গোছানো শহরগুলি অচিরেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। যত সময় গড়াচ্ছে উভয়পক্ষেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। সেনামৃত্যুর পাশাপাশি প্রাণহানি হয়েছে ইউক্রেনের নিরীহ নাগরিকদের। রাশিয়ার মুহুর্মুহু বোমা হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ফলে এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে রাজধানী কিয়েভ-সহ বেশ কিছু এলাকা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেই সামনে থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নিয়মিত ভিডিও বার্তা দিয়ে জানাচ্ছেন, কোনও অবস্থাতেই তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাবেন না। শনিবার ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সরাসরি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে রুশ হামলা ঠেকাতে রাজনৈতিক সাহায্যের আর্জি জানান। পরে ইউক্রেন (Ukraine) প্রেসিডেন্ট নিজেই ট্যুইট করে মোদিকে ফোন করার খবর জানান।
আরও পড়ুন – ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলার বাসিন্দাদের ফেরাতে কন্ট্রোল রুম রাজ্য সরকারের
শনিবার ইউক্রেনের (Ukraine) প্রতিরক্ষামন্ত্রক দাবি করেছে, রুশ হামলায় তাদের ২০০-র বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। যার মধ্যে কয়েকজন শিশুও আছে। ইউক্রেনের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের উপর বোমা ফেলেছে রাশিয়া। রুশ বাহিনীর হামলায় জখম হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। এর মধ্যে ৩৬টি শিশু ও কয়েকজন বিদেশি নাগরিক। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দাবি, তাদের পাল্টা প্রতিরোধে রাশিয়ার সাড়ে তিন হাজার সেনা খতম হয়েছে। যুদ্ধবন্দি হয়েছে কমপক্ষে আড়াইশো রুশ সেনা। এই হামলায় রাশিয়ার অন্তত ৮৬টি ট্যাঙ্ক, ৫১৬টি সাঁজোয়া গাড়ি, ১২টি যুদ্ধবিমান, ৯টি কপ্টার ধ্বংস করেছে। মাঝ আকাশেই নষ্ট করে দিয়েছে ২৬টি মিসাইল। একইসঙ্গে তারা স্নেক আইল্যান্ডও পুনর্দখল করেছে। তবে ইউক্রেনের এই দাবি নিয়ে মস্কো কোনও শব্দ খরচ করেনি। ক্ষয়ক্ষতির কথা মানতেও চায়নি। উল্টে রাশিয়ার দাবি, তারা ইউক্রেনের ২১১টি সেনাঘাঁটি উড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনের ২০০-র বেশি সেনার মৃত্যু হয়েছে। রুশ সেনা কিয়েভে একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দখল নিয়েছে। দখল করেছে মেলিতোপোল শহর। যুদ্ধের তৃতীয় দিনেও রাশিয়ার একের পর এক বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মুহুর্মুহু কেঁপে উঠেছে ইউক্রেনের মাটি। প্রবল আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন মেট্রো স্টেশনে বা সেনা বাঙ্কারে। কিয়েভের বেশ কয়েকটি বহুতলেও এদিন রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে। ফলে বহুতলগুলি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। ইউক্রেনকে সব ধরনের সাহায্য করার কথা জানিয়েছে আমেরিকা ও আরও ২৮টি দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ৩৫০ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তার ঘোষণা করেছেন।