শান্তনু বেরা, কাঁথি : ৪০ বছর ধরে কাঁথির পুরসভায় কোনও না কোনও ‘অধিকারীর’ (Adhikari) নেমপ্লেট ছিল। বুধবার থেকে বদলে গেল সেই ছবিটা। এদিন জয়ী কাউন্সিলররা শপথ নিলেন। সেই সঙ্গে জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ারে, রাজনৈতিক লড়াইয়ে খড়কুটোর মতো ভেসে গেল অধিকারী (Adhikari) পরিবার। কাঁথির মহকুমা শাসক আদিত্যবিক্রম মোহন হিরানির থেকে শপথ গ্রহণ করে, এদিন পুরপ্রধানের চেয়ারে বসলেন সুবলকুমার মান্না। নিয়ম অনুযায়ী সাতদিন পরেই উপ পুরপ্রধান হিসেবে শপথ নেবেন সুপ্রকাশ গিরি। একটানা সাত বার কাউন্সিলর হয়ে রীতিমতো রেকর্ড গড়ে, প্রথমবার পুরপ্রধানের চেয়ারে বসেই সুবলবাবু বুঝিয়ে দেন, আগে যেমন অধিকারী পরিবারের অঙ্গুলিহেলনে পুরসভা চলত, এবার সেই নীতি চলবে না। এদিন তিনি জানান, “একুশটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে, আলোচনার ভিত্তিতে, কাঁথি পুরসভা সামনের দিকে এগোবে। যাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছেন কিংবা যাঁরা আমাকে ভোট দেননি, আজ থেকে আমি সকল কাঁথিবাসীর পুরপ্রধান।”
আরও পড়ুন: উপাচার্যের প্রতি ক্ষোভ বাড়ছে পড়ুয়াদের, বিশ্বভারতীতে গণ পদত্যাগ
নতুন পুরপ্রধান প্রথম দিনই জানান, “আগামীদিনে নতুন পুরবোর্ড যানজটমুক্ত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর কাঁথিবাসীকে উপহার দিতে চায়। জলনিকাশি সমস্যা এবং পানীয় জল সরবরাহের উপর নতুন বোর্ড বিশেষ গুরুত্ব দেবে। জোর দেওয়া হবে শহরের সবুজায়নে।” সুপ্রকাশ গিরিও কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নিয়ে প্রথম দিন জানিয়ে দেন, “অধিকারীদের জমানা এখন অতীত। এবার পুরভোটে কাঁথিবাসী স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোনও অধিকারী নয়, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। মানুষের সেই আশীর্বাদকে পাথেয় করে, আমরা সকল কাউন্সিলার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেব।” উত্তর কাঁথির বিজেপি বিধায়ক সুমিতা সিনহাকে হারিয়ে প্রথমবার কাউন্সিলর হওয়া রিনা দাস কাঁথি পুরসভার কাউন্সিলর ইনচার্জ হচ্ছেন। আর অধিকারীদের হটিয়ে পুরসভায় কাউন্সিলররা এদিন শপথ নেওয়ার পরেই, দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গি মোড়ে কাঁথিবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন সভা’ করে তৃণমূল কংগ্রেস।