মিতা নন্দী, ঝাড়গ্রাম : শালপাতা সেলাই করে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে আশালতা। ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রামের খাসজঙ্গল গ্রামের মেয়ে। বিস্তীর্ণ এলাকা শাল-সেগুনের জঙ্গলে ঘেরা। গ্রামবাসীদের অনেকেরই জঙ্গল-নির্ভর জীবন! এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার জঙ্গল থেকে শালপাতা সংগ্রহ করে থালা তৈরি করে। তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চলে। সরকারের রেশন পান ওঁরা।
আরও পড়ুন-বিশ্বভারতীতে ধুন্ধুমার পরীক্ষা বয়কট ছাত্রদের
তবুও অন্যান্য খরচের জন্য ভরসা জঙ্গলের শালপাতা, শুকনো কাঠ। দারিদ্র্যের জন্য ছেলেমেয়েদের পড়ানো সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই ওই এলাকায় মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছেলেমেয়ে নেই বললেই চলে। নয়াগ্রাম ব্লকের গভর্নমেন্ট মডেল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী আশালতা সিং এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। বাড়িতে রয়েছেন মা, বাবা, দাদা ও বোন। অর্থের অভাবে পড়াশোনা ছাড়তে হয় দাদা শ্যামসুন্দরকে। এলাকায় সেচের ব্যবস্থা না থাকায় তেমন চাষবাস হয় না। তাই ভরসা জঙ্গলের শালপাতা। আশালতা জানায়, ‘সকাল হলেই মায়ের সঙ্গে জঙ্গলে যাই শালপাতা তুলতে। ওই পাতা রোদে শুকিয়ে থালা তৈরি করি। কাজের ফাঁকে যখনই সময় পাই, বই নিয়ে বসি। খুব ইচ্ছে শিক্ষিকা হওয়ার। লক্ষ্যপূরণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য পেলে খুব ভাল হয়।’