অন্যান্য বছরের মতো এবারও ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা মুজিবর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বঙ্গবন্ধু-সহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অন্যান্য শহিদ নেতাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান তিনি। এক বিশেষ প্রার্থনাতেও অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা এদিন বঙ্গবন্ধু ভবনের ভিতরেও বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন। বঙ্গবন্ধু ভবন থেকে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী যান বনানী কবরস্থানে। যেখানে ১৯৭৫-এর ১৫ অগাস্ট ঘাতকদের হাতে খুন হওয়া বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সমাধি রয়েছে। সেখানেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ঘাতকরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে খুন করেছিল। ঘাতকদের হাতে খুন হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ১৮ জন সদস্য। সে কারণে বাংলাদেশ ১৫ অগাস্ট দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা জানান, বঙ্গবন্ধুর হত্যার ষড়যন্ত্রে কারা লিপ্ত ছিল তা একদিন প্রকাশ্যে আসবেই। ইতিমধ্যেই সরকার জাতির জনকের খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা শুরু করেছে। দোষী সাব্যস্তদের অনেকেরই সাজা হয়েছে। ওই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল অথচ এখনো যাদের শাস্তি দেওয়া যায়নি তাদের প্রত্যেকের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সরকার একাত্তরের যুদ্ধপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করছে। বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হল, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা।
আরও পড়ুন- উত্তরপ্রদেশে এবং গুজরাটে ‘খেলা হবে দিবসে’ বাধা বিজেপির
দেশে যাতে কোনও রকম অনৈতিক কার্যকলাপ না হয় সে কারণে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করেছে তাঁর সরকার। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি চক্রীরা। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখতেন, যে আদর্শ নিয়ে পথ চলতেন বাংলাদেশ সরকার তা অবশ্যই বাস্তবায়িত করবে। বাংলাদেশ হিংসা ও ষড়যন্ত্রের কোন ঠাঁই হবে না। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে দেওয়া। তবে আমরা তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করেছি। বরং যারা এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর ৪৬ তম বার্ষিকীতে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও সমবেদনা জানিয়েছেন হাসিনাকে। ইমরান জানিয়েছেন, যেভাবে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল কোন নিন্দাই তার জন্য যথেষ্ট নয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও শেখ হাসিনার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন- ফোনে দলীয় সাংসদদের খোঁজ নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো,
একই সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়নে হাসিনা সরকারকে সব ধরনের সাহায্য করার, তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়াও এদিন বাংলাদেশের সর্বত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আয়োজন করা হয় একাধিক অনুষ্ঠানের। এদিন দেশের সর্বত্রই ছিল শোকের আবহ। প্রতিটি অনুষ্ঠানেই আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।