প্রতিবেদন : ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়া ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই মুহূর্তে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এতটাই ক্ষোভ যে, রাষ্ট্রসংঘের চার কমিটির ভোটাভুটিতে একটিতেও জিততে পারল না মস্কো। ভোটে হেরে ওই চার কমিটির কোনওটিতেই আর রাশিয়ার প্রতিনিধি থাকছে না। শুধু তাই নয়, একটি কমিটির ভোটাভুটিতে ইউক্রেনের কাছে হারতেও হয়েছে তাদের। ভোটাভুটিতে ইউক্রেন যে পরিমাণ ভোট পেয়েছে তার অর্ধেকও পায়নি মস্কো।
আরও পড়ুন-“সুদিন কাছে এসো, ভালোবাসি একসাথে…”
শেষ কবে রাষ্ট্রসংঘে এভাবে রাশিয়ার মুখ পুড়েছে তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না। রাষ্ট্রসংঘের নন গভর্নমেন্টাল অর্গানাইজেশন, ইউএন উওমেন এক্সিকিউটিভ বোর্ড, ইউনিসেফ এক্সিকিউটিভ বোর্ড ও পারমানেন্ট ফোরাম অন ইন্ডিজেনাস ইস্যু কমিটির সদস্যপদের জন্য ভোটাভুটি ছিল। ভোটাভুটিতে অংশ নেন রাষ্ট্রসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে (ইকোসোক) থাকা ৫৪টি দেশের প্রতিনিধিরা। চার কমিটিতেই লজ্জার হার হয়েছে রাশিয়ার। ওই চার কমিটিতে রাশিয়া যথাক্রমে ভোট পেয়েছে ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮টি। তার মধ্যে পারমানেন্ট ফোরাম অন ইন্ডিজেনাস ইস্যু কমিটির সদস্যপদের জন্য লড়েছিল ইউক্রেন। ভলোদিমির জেলেনস্কির দেশ পেয়েছে ৩৪টি ভোট। অর্থাৎ ওই কমিটির ভোটে ইউক্রেনের কাছে হারতে হয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশকে। রাষ্ট্রসংঘের চার গুরুত্বপূর্ণ কমিটির ভোটে রাশিয়ার মুখ থুবড়ে পড়ার ঘটনায় উল্লসিত আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ ইউরোপের একাধিক দেশ।
আরও পড়ুন-জন এলিয়ট ড্রিংকওয়াটার বেথুন এক মানবদরদি রাজপুরুষ
অন্যদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও জোরালো করছে রাশিয়া। ইতিমধ্যেই তারা মারিউপোল শহরকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। রাশিয়ার মতো বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে একটানা প্রায় ৫০ দিন লড়তে গিয়ে ইউক্রেনের অস্ত্রভাণ্ডার প্রায় নিঃশেষিত। সেনাবাহিনী রসদের অভাবে ভুগছে। এই অবস্থায় ইউক্রেনের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিয়েভের জন্য ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মঞ্জুর করেছেন প্রেসিডেন্ট। এই সাহায্যের মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক, সাবমেরিনের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র। রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে যে ধরনের যুদ্ধাস্ত্র থাকা দরকার তার প্রায় সবকিছুই দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বাইডেন। পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি বলেছেন, খুব শীঘ্রই ইউক্রেন এইসব অস্ত্রশস্ত্র পাবে। যদিও কতদিনের মধ্যে জেলেনস্কির দেশ এই অস্ত্র পাবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোনও মন্তব্য করেননি কিরবি। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইউক্রেনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার অপরাধ ঘটে চলেছে। যারা এর জন্য দায়ী তাদের একদিন আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।