হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সিবিআই তদন্ত এবং সিট গঠনের রায় দিয়েছে। এই রায় নিয়ে সরাসরি যদিও কোন মন্তব্য তারা করে নি। হাইকোর্টে জমা দেওয়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সরব তৃণমূল। এই নিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, তিনি এই রায়ে অখুশি। আইনশৃঙ্খলা যা পুরোপুরি রাজ্যের বিষয় সেটায় বারবার সিবিআইয়ের চলে আসা যে একেবারেই কাম্য নয় সেটা তার মন্তব্যে স্পষ্ট। সৌগত রায় বলেন এই যদি রায় বলবৎ থাকে, তাহলে এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার আবেদন করবে। তৃণমূল সাংসদ এই মর্মে কটাক্ষ করে বলেন, বিজেপি জনগণের আদালতে হেরে গিয়ে এখন হাইকোর্টের আশ্রয় নিয়েছে, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এনএইচ আর সির রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দেখার বিষয়ে কোনও এক্তিয়ার নেই বলে মন্তব্য করেছেন সৌগত রায়।
হাইকোর্টের রায় নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেন নি তবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেই কথা জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কুণাল জানান, এ বিষয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন। তার আগে রায় পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দেখে নেওয়া হবে।
এনএইচআরসি-র বিরুদ্ধে সুর চড়ান কুণাল। তিনি বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যাঁরা এরাজ্যে তদন্তে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই বিজেপির নেতা-কর্মী। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন তোলেন, “ভোটের আগে কারা হুমকি দিয়েছিল? কারা ভেবেছিল ভোটের পরে ক্ষমতায় এসে রাজ্যে সন্ত্রাস চালাতে পারবে? কারা বলেছিল 6 ইঞ্চি উচ্চতা কমিয়ে দেব? শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার লোক থাকবে না? মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে?”
কুণাল এই নিয়ে অভিযোগ করেন, সেই সময় আইনশৃঙ্খলা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ছিল। সেই সময়ে রাজ্যের দায়িত্বশীল পুলিশ আধিকারিকদের সরিয়ে সে জায়গায় বিজেপির পছন্দসই পুলিশ আধিকারিকের বসানো হয়েছিল।
জাতীয় মানববাধিকার কমিশনের রিপোর্টে কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের তালিকায় ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উদয়ন গুহ, শেখ সুফিয়ানের মতো বেশ কিছু নেতা।প্রশ্ন ওঠে রাজ্যের একজন মন্ত্রীকে কীভাবে দুষ্কৃতী বলা যেতে পারে! হাইকোর্টের রায়ের পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি তিনি পেশায় আইনজীবী। তবে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট একবারেই উদ্দেশ্য প্রণোদিত । তাঁর মতে, “এই রিপোর্ট মিথ্যে-কল্পনাপ্রসূত। Nhrc-র দলে সব বিজেপির লোক ছিল। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এরা কিছু লোকের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে”।
কুণাল ঘোষ নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ভোট-পরবর্তী হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেক তৃণমূল কর্মী। মৃত্যু হয়েছে অন্য বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরও। কিন্তু মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে গিয়েছেন। এটা সরাসরি পক্ষপাতদুষ্ট। এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরার উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি। বলেন, এক জায়গায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের হোটেলে ঘর পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। বারবার হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে। রক্তাক্ত হতে হচ্ছে।এইসব ঘটনা এনএইচআরসি-র নজরে পড়ছে না!