নয়াদিল্লি : আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বুলডোজার নামিয়ে উচ্ছেদ অভিযান ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির নির্লজ্জ চেষ্টা শুরু করেছিল বিজেপি পুরসভা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে থাকা দিল্লি পুলিশ৷ বিরোধীদের প্রবল সমালোচনা ও দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর ধাক্কা খেল বিজেপির ‘বুলডোজার রাজনীতি’৷
দেশের রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বারবার ব্যর্থ হয়ে গোটা বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার৷ বুধবার জাহাঙ্গিরপুরীর উচ্ছেদ অভিযান তারই ফলশ্রুতি৷ কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে৷ যদিও শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরও বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে উচ্ছেদ অভিযান। পরে শোরগোল শুরু হতে তা বন্ধ হয়। বুধবার সকালেই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, জাহাঙ্গিরপুরীতে বুলডোজার দিয়ে দোকানপাট ভাঙা বা গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
এদিন সাতসকালেই ৪০০ পুলিশকর্মী আর ৯টি বুলডোজার নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে শামিল হয়েছিলেন দিল্লি পুরসভার আধিকারিকরা। উত্তর দিল্লি পুরনিগমের বুলডোজার অভিযানের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের করে জমিয়ত-উলেমায়ে-হিন্দ। উচ্ছেদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল, দুষ্মন্ত দাভে, পিভি সুরেন্দ্রনাথ। প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্নার কাছে তাঁরা আবেদন জানান, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। অবিলম্বে তা বন্ধের নির্দেশ দিক আদালত। প্রসঙ্গত, দিল্লি পুরসভা বিজেপি পরিচালিত। হনুমান জয়ন্তীর সংঘর্ষের ঘটনার পরই হঠাৎ করে জাহাঙ্গিরপুরীতে নির্মাণ ভাঙা হচ্ছে কেন তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। উচ্ছেদের নামে বুলডোজার অভিযানে উপস্থিত ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতায় থাকা দিল্লি পুলিশের বিশাল বাহিনী।
শেষ পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশের পর বন্ধ হয় উচ্ছেদ অভিযান। এদিকে জাহাঙ্গিরপুরীর হিংসার ঘটনায় ৩ নাবালক-সহ গ্রেফতার ২৪। খোদ রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দিল্লি পুলিশের অপদার্থতা ঢাকতে বাংলার ঘাড়ে দোষ চাপানোর নির্লজ্জ চেষ্টা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ প্রচার করা হচ্ছে, দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীর ঘটনায় অভিযুক্তদের অনেকের বাড়ি যেহেতু পশ্চিমবঙ্গে, তাই এরা সবাই নাকি তৃণমূল! আসলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের হাতে থাকা দিল্লি পুলিশ দেশের রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুরোপুরি ব্যর্থ৷ এই ব্যর্থতা আড়াল করতে চিরাচরিত কৌশলে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে মূল বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে বিজেপি ও অমিত শাহর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷