সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন : এত কিছুর পরও বিশ্বভারতীর উপাচার্যের মানবিক মুখ দেখা গেল না। উল্টে তাঁর বাড়ির সামনে সুবিচার চাইতে আসা মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা তো করলেনই না, উপরন্তু বাইক-বাহিনী পাঠালেন ভয় দেখিয়ে সরিয়ে দিতে। আর রাজ্যপালের কাছে নিজের নিরাপত্তা চাইলেন। দায়সারাভাবে বিশ্বভারতীর তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে শোকপ্রকাশ করা হয় মাত্র। অমানবিক আচরণ, তার ওপর বাইক-বাহিনী পাঠানো নিয়ে উপাচার্যের নিন্দায় সরব সর্বস্তরের মানুষ।
টিএমসিপি রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই উপাচার্য পড়ুয়াদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করছেন। পড়ুয়ারা পড়ুয়াই, তাদের সেইভাবেই দেখা উচিত। উনি কাউকে সিপিএম, কাউকে তৃণমূল, এইভাবে চিহ্নিত করছেন। ওঁর কাছে এটা কাম্য নয়।’ বাইক-বাহিনী নিয়ে মন্তব্য, ‘এটা ওঁর কাছে আশা করি না। উনি তো আদতে একজন শিক্ষক। এই ঘটনায় ধিক্কার জানাই।’
আরও পড়ুন – অফিস ভাড়া দিচ্ছে ফরওয়ার্ড ব্লক
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ নিয়ে পরিবারের লোকজন সুবিচার চাইতে পূর্বপল্লিতে উপাচার্যের বাসভবন পূর্বিতার সামনে। বার বার ডাকাডাকি করলেও উপাচার্য একবারও নেমে এসে মৃত ছাত্রকে দেখতে আসেননি বা তাঁর শোকাহত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেননি। পাক্কা তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর শান্তিনিকেতন থানায় হাজির হন মৃত ছাত্রের পরিজনেরা। বেলা বাড়তে উত্তেজনা ছড়ায়। উপাচার্যের ‘মাসলম্যান বাহিনী’ বলে পরিচিত দশজনের একটি বাইকবাহিনী জমায়েত সরাতে হাজির হয়। পুলিশ ধাওয়া করলে অনেকে পালিয়ে গেলেও কয়েকজন ধরা পড়ে। যাদের দুজন হল বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) কর্মী রাজীব ঝা এবং শিক্ষাসত্রের জুওলজি শিক্ষক গৌতম সাহা।
জানা গিয়েছে, রাজীব দীর্ঘদিন সুইপার ছিলেন। বর্তমানে ‘গ্রুপ সি’ কর্মী। ১৬ সালেও তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গৌতম শিক্ষাসত্রের শিক্ষক হলেও, বিনয় ভবনের ফ্যাকাল্টিতে আবেদনকারী। শনিবার মৃত ছাত্রের বাড়িতে যান মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও দুই বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরি এবং বিধান মাঝি। চন্দ্রনাথ বলেন, একটি ছাত্র মারা গেলেন। তাঁকে দেখতে এলেন না বা পরিবারের সঙ্গে কথাও বললেন না উপাচার্য! বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) টিএমসিপি ইউনিটের সভানেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, একজন ছাত্রী হিসেবে আমি চাইছি উপাচার্য মানবিক হন। মৃতের বাবা সঞ্জীব দাস বলেন, ছেলে অসীম দাসকে খুন করা হয়েছে। এই সত্যটাকে কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দিতে চাইছে। সিআইডি নয়, সিবিআই তদন্ত এবং হস্টেল ওয়ার্ডেনের গ্রেফতার চাইছি।