প্রতিবেদন, আগরতলা : ত্রিপুরায় বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব বিজেপিরই বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মন। সরকারি নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিলের দাবি তুলেছেন তিনি। এ নিয়ে ঝড় উঠেছে ত্রিপুরার রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন- নেহরু ‘আদর্শ’ নেতা বললেন বিজেপির মন্ত্রী
ট্যুইটারে সুদীপ লিখেছেন, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য ত্রিপুরা জয়েন্ট রিক্রুটমেন্ট বোর্ড সম্প্রতি গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার বিধিমালা নিয়ে পরীক্ষার্থী মহলে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় এ-নিয়ে পরীক্ষার স্বচ্ছতা প্রশ্নচিহ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষ করে গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি চাকরির ক্ষেত্রে স্থানীয় ভাষা হিসেবে বাংলা ও ককবরক বাধ্যতামূলক হওয়া যুক্তিসঙ্গত, তবে কোনওভাবেই ইংরেজি স্থানীয় ভাষার মর্যাদা পেতে পারে না।
দ্বিতীয়ত, অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে সিলেবাস নির্দিষ্ট করা থাকলেও সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে সিলেবাসের কোনও পরিসীমা নির্দিষ্ট করা নেই, কিংবা ত্রিপুরা বিষয়ক কোনও কিছুই নির্ধারিত নেই যা নিঃসন্দেহে অযৌক্তিক।
তৃতীয়ত, এই সমস্ত চাকরির ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অধিকার নিশ্চিত করতে পিআরসি বাধ্যতামূলক হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত।
আরও পড়ুন- বিরোধী জোটের মধ্যমণি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী, ভার্চুয়াল বৈঠকে ঐক্যের বার্তা
সবশেষে, বিশেষ করে গ্রুপ ডি চাকরির ক্ষেত্রে আমাদের রাজ্যে কখনওই বহিঃরাজ্যের প্রার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না এবং লিখিত পরীক্ষাও কোনওদিন হয়নি। কারণ, এই অংশের চাকরিপ্রার্থীরা অধিকাংশই সার্বিকভাবে দুর্বল হয়। কিন্তু এবারই এর ব্যতিক্রম হল, তবে কার স্বার্থে কেন হল, জানার অধিকার রাজ্যবাসীর রয়েছে। এই সার্বিক প্রেক্ষাপটে আমি উল্লিখিত পরীক্ষা কর্মসূচি বাতিল করার জন্য আরেকবার সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি এবং গোটা বিষয়টির তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এরপর এই ট্যুইট তুলে ধরে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, কী অবস্থা! মুখ্যমন্ত্রী সিনিয়র বিধায়কের কথাও শোনেন না। তাঁকে ক্ষোভ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে হয়।
আরও পড়ুন- বিরোধী নেতাদের বৈঠক আজ
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় বিজেপির গোষ্ঠীবাজি তুঙ্গে। জল্পনা ছিল বিপ্লবকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে সুদীপকে। দিনক্ষণ নিয়েও কানাঘুষো চলছিল। কিন্তু বিপ্লব দেব দিল্লি ঘুরে আসার পর সেই জল্পনায় জল ঢালছেন তাঁর শিবির। এই পরিস্থিতিতে সুদীপ রায়বর্মনের পোস্ট বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। এদিকে আর এক বিজেপি নেতা এবং প্রাক্তন স্পিকারও একহাত নিয়েছেন বিজেপিকে। দল যেভাবে চলছে তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। রাজ্য বিজেপির এই ডামাডোলের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের ধারা অব্যাহত।