সৌমালি বন্দ্যোপাধ্যায়: এবার পঞ্চায়েত দফতরের উদ্যোগে রাজ্যের অনুর্বর জমিতে ফসল ফলানো শুরু হল। এই ব্যাপারে এলাকার কৃষকদের নিয়ে কোম্পানি তৈরি করে জেলায় জেলায় কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সদস্য তথা কৃষকদের যাবতীয় পরিকাঠামোগত সাহায্য, উন্নত প্রশিক্ষণ এমনকী উৎপাদিত পণ্যের বিপণনেরও ব্যবস্থা করেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ সংস্থা কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন(সিএডিসি)।
আরও পড়ুন-মাওবাদী কার্যকলাপ রুখতে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যে সমন্বয় বৈঠক
ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর, বীরভূম সেইসঙ্গে উত্তরবঙ্গেও এইরকম শতাধিক কৃষকদের একসঙ্গে নিয়ে কোম্পানি তৈরি করে অনুর্বর জমিতে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের সহযোগিতায় জোরকদমে ফসল ফলানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে রাজ্যে এইরকম ৬২টি ফার্মার্স প্রডিউসিং কোম্পানি চলছে। যার মাধ্যমে এখনই প্রায় ১০ হাজার কৃষক অনুর্বর জমিতে বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। এছাড়াও আরও ১০টি এইরকম কোম্পানি তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যার মাধ্যমে আরও প্রায় ২ হাজার কৃষক কাজ আরম্ভ করার অপেক্ষায় রয়েছেন। সম্প্রতি বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এইভাবে কৃষকদের নিয়ে কোম্পানি তৈরি করে অর্থকরী ফসল উৎপাদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-পুলিশে রদবদল
রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তরের কর্তারা সম্মেলনে কোম্পানি গড়ে কীভাবে অনুর্বর জমিতে চাষ করে লাভের মুখ দেখা সম্ভব তা তুলে ধরেন। অনেক শিল্পপতিও এই ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায় জানান, ‘‘গ্রামীণ এলাকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি। তারই অঙ্গ হিসেবে রাজ্যের কৃষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ সহ সমস্তরকম সহায়তা দিয়ে আমরা অনুর্বর জমিতে এবার ফসল ফলানোর কাজ শুরু করেছি।’’ রাজ্যের কোথায় কোন অনুর্বর জমিতে কী কী ফসলের চাষ করলে কৃষকরা লাভবান হবেন তা ঠিক করে দেওয়ার পাশাপাশি পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ সংস্থা সিএডিসি’র পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনেরও ব্যবস্থা করেছে সিএডিসি।
আরও পড়ুন-রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করছেন, পুর-বিল পাশ না হলে অবস্থান
রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে প্রয়োজনে তাঁদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের বিশেষ সচিব তথা সিএডিসি’র কর্তা সৌম্যজিৎ দাস পুরো বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন। কীভাবে এই উদ্যোগ আরও ছড়িয়ে যেতে পারে তার জন্য নিরলস কাজ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই এইরকম পুরুলিয়ার জয়পুরে অনুর্বর জমিতে তরমুজ চাষ করে প্রভূত লাভের মুখ দেখছেন এলাকার কৃষকরা। এর পাশাপাশি কোম্পানি তৈরি করে মুর্শিদাবাদের নওদায় পেঁয়াজ, হরিহরপাড়ায় হাঁস, মুরগি পালন, বীরভূমের লাভপুরের জামনা গ্রাম পঞ্চায়েতের পতিত জমিতে বিভিন্ন অরগ্যানিক সবজি, মাশরুম এমনকী শিলিগুড়িতে অত্যন্ত উপকারী ফল অ্যাভোগাডো চাষ করতে শুরু করে দিয়েছেন কৃষকরা। সিএডিসির কর্তা সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘অনুর্বর জমিতে ফসল ফলাতে আমরা কৃষকদের সমস্ত দিক দিয়ে সাহায্য ও পরামর্শ দিচ্ছি।”