প্রতিবেদন : শেষরক্ষা হল না। রণাঙ্গনেই প্রাণ গেল ‘ঘোস্ট অফ কিয়েভ’ বা কিয়েভের ভূত নামে পরিচিত অসমসাহসী ফাইটার পাইলট মেজর স্তেপান তারাবালাকার। দীর্ঘ দু’মাস ধরে চলা যুদ্ধে একের পর এক রুশ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছেন ইউক্রেনীয় পাইলট স্তেপান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রুশ আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর, দাবি বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের। সংবাদসংস্থা ডেইলি মেইলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ১৩ মার্চ মাঝ আকাশে রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে লড়াই করার সময় স্তেপানের মিগ-২৯ ফাইটার জেট ভেঙে পড়ে। তবে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বীরবিক্রমে লড়াই চালিয়েছিলেন বছর তিরিশের ওই তরুণ বায়ুসেনা অফিসার। নিজের হাতে ধ্বংস করেছিলেন একের পর এক রুশ যুদ্ধবিমান। জানা গিয়েছে, অসীম সাহসিকতার জন্য স্তেপানকে ইউক্রেনের সর্বোচ্চ মরণোত্তর সামরিক সম্মান ‘অর্ডার অফ দ্য গোল্ডেন স্টার’ প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-বিস্মৃতির অন্তরালে অপুর সংসার
রাশিয়ার কাছে কিয়েভের ভূত নামে পরিচিত হয়ে ওঠা মেজর জেনারেলের স্ত্রী ও এক পুত্র আছেন। এমনকী, তাঁর মা-বাবাও বেঁচে রয়েছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিল রাশিয়া। সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা জবাব দিয়েছিল ইউক্রেনীয় সেনা। ইউক্রেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, যুদ্ধের প্রথম দিনেই রাশিয়ার ১০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছিলেন স্তেপান। সব মিলিয়ে ১৩ মার্চ প্রাণ হারানোর আগে পর্যন্ত ৪০টি রুশ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামান স্তেপান। এ ধরনের একজন সাহসী যোদ্ধার মৃত্যুতে জেলেনস্কি বাহিনীতে বড় মাপের ধাক্কা লেগেছে বলেই সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। উল্লেখ্য, ট্যুইটারে ভাইরাল হওয়া অসংখ্য ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের চালকের আসনে হেলমেট পরে বসে আছেন স্তেপান। ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ওই যুদ্ধবিমান নিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন-প্রতারণা থেকে সতর্ক করছে বাসন্তী, বীরু
গুলি করে নামিয়ে আনছেন একের পর এক রুশ বিমান। অন্যদিকে সংবাদসংস্থা রয়টার্স এই খবর খারিজ করে দিয়েছে। তাদের পাল্টা দাবি, ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও ২০০৮ সালে ডিজিটাল কমব্যাট সিমুলেটর নামে একটি ভিডিও গেমের ফুটেজ। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের এক গ্রামেই জন্ম স্তেপানের। দরিদ্র পরিবারের এই সন্তান স্বপ্ন দেখতেন ফাইটার বিমান চালানোর। সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই যোগ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীতে। মৃত মেজরের বাবা জানিয়েছেন, আমরা শুধু জানি আমাদের ছেলে একটি অভিযানে গিয়েছে। সেই অভিযান সফল হয়েছে। তবে অভিযান শেষ করে স্তেপান আর বাড়ি ফেরেনি।