প্রতিবেদন : রাশিয়া (Russia) কি সত্যিই চাপে পড়েছে? সোমবারের ঘটনাপ্রবাহ অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যে রাশিয়া মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় আটকে থাকা ইউক্রেন সেনাদের আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই বলে হুমকি দিচ্ছিল, এদিন তারাই আচমকা আহত সেনাদের নিরাপদে বেরিয়ে যেতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। খবর আল জাজিরার। রাশিয়ার (Russia) প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, আজভস্টালে আটকে থাকা আহত সেনারা যাতে বেরিয়ে যেতে পারেন, সে জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আহত সেনাদের রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন নোভোয়াজোভস্কের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
সেনাদের উদ্ধার করার সময় সব ধরনের হামলা বন্ধ রাখা হবে। মারিউপোলের আজভস্টালে প্রায় ১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা ও আজভ ব্রিগেডের সদস্য আটকে আছেন। মস্কোর এমন নরম আচরণের কারণ কী? ব্রিটেন দাবি করছে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিজেদের এক-তৃতীয়াংশ স্থলসেনা খুইয়েছে রাশিয়া। ডনবাস অঞ্চলে রুশ বাহিনী যে হামলা চালাচ্ছে, তাতে সেনার শক্তিক্ষয় ত্বরান্বিত হয়েছে। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সের তথ্যের ভিত্তিতে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলছে, আগামী এক মাসে নাটকীয়ভাবে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। রাশিয়া ক্রমশ দুর্বল হবে। পিছু হঠবে। তাদের এই দাবি বাস্তবের মাটি পেয়েছে খারকিভ থেকে আসা খবরে। সেখানে রাশিয়ার সীমান্তে পৌঁছনোর দাবি করেছেন ইউক্রেনের সেনারা। প্রমাণ হিসেবে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে কিয়েভ।
আরও পড়ুন: কসমেটোলজি পড়ে কাজের উপায়
জানা যাচ্ছে, ফুটেজটি উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলের। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সহকারী পরিচালক ভাদিম ডেনিসেনকো জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সেনারা উত্তরে এতটাই অগ্রসর হয়েছে যে, তারা প্রায় রাশিয়ার সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছেন। আল জাজিরার রিপোর্ট, ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের জেরে রুশ সেনাবাহিনী খারকিভের দখল ছেড়ে পালিয়েছে। যদিও ইউক্রেনের এই দাবি স্বীকার করেনি মস্কো। বরং ক্রেমলিন জানিয়েছে, রুশ সেনা এদিনও ইউক্রেনের তিনটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। রুশ দাবি, মায়কোলাইভের ইয়েভহেনিভকার কাছে একটি এসইউ-২৫ ও খারকিভের কোমেসুভাকায় আরেকটি এসইউ-২৫ বিমান গুলি করে মাটিতে নামানো হয়েছে। পাশাপাশি কৃষ্ণ সাগরের স্নেক আইল্যান্ডের কাছে আরও একটি এসইউ-২৪ বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মিসাইল খারকিভের দু’টি কমান্ড পোস্টেও আঘাত হেনেছে। এছাড়া অস্ত্রের গুদামও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দোনেৎস্ক ও লুহানেস্কেও একই রকম হামলা চলেছে। এই যুদ্ধের আবহেই বিশ্বের বৃহত্তম বার্গার চেন ম্যাকডোনাল্ডস সোমবার জানিয়েছে, তারা রাশিয়ায় ব্যবসা বন্ধ করে দেবে। সংস্থার বক্তব্য, ইউক্রেনে মানবিক বিপর্যয়ের কারণে এই সিদ্ধান্ত। রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে দিল ম্যাকডোনাল্ডস। রাশিয়ায় ম্যাকডোনাল্ডসের ৮০০-র বেশি দোকান আছে।