প্রতিবেদন : আনন্দের উপকরণ, নাকি মৃত্যুর পরোয়ানা? সাম্প্রতিককালে ঘুড়ি উড়ানোর চিনা মাঞ্জা আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহানগরীর মা ফ্লাইওভার থেকে শুরু করে এজেসি বোস রোড ফ্লাইওভার, বিদ্যাসাগর সেতু, এমনকী কোনা এক্সপ্রেস হয়ে সাঁতরাগাছি পর্যন্ত এই চিনা মাঞ্জা ডেকে আনছে একের পর এক দুর্ঘটনা। নাকে, মুখে, গলায়, মাথায় মাঞ্জা জড়িয়ে মূলত আহত হচ্ছেন স্কুটার, মোটর বাইকের মতো দু’চাকার যানের আরোহীরা।
গত বছরে ঘটেছে একটি মৃত্যুও। সন্দেহ নেই, এই ধরনের অঘটন রুখতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। জনচেতনাও জাগিয়ে তোলা হচ্ছে। এবারে দুর্ঘটনা রুখতে আরও সুসংবদ্ধ পরিকল্পনার পথে হাঁটতে চায় পুলিশ। এই উদ্দেশেই ফ্লাইওভার এবং ব্রিজের দু’পাশ উঁচু শক্ত লোহার জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, জানা গিয়েছে পুলিশসূত্রে। মা ফ্লাইওভারের দেখভালের দায়িত্ব কেএমডিএ-র এবং বিদ্যাসাগর সেতু এইচআরবিসি-র এক্তিয়ারে। উঁচু শক্ত জাল দিয়ে ব্রিজের দু’পাশ ঘিরে দেওয়ার এই পরিকল্পনার কথা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে এইচআরবিসি এবং কেএমডিএ-কে চিঠি দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
সুউচ্চ লোহা এবং তারের জাল দিয়ে সেতুর দু’পাশ ঘিরে দিলে কীভাবে চিনা মাঞ্জা থেকে মূল রাস্তা এবং যানবাহনের চালক-আরোহীদের সুরক্ষিত রাখা সম্ভব, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। রাতে পথ আলোকিত রাখার জন্য হাইমাস্ট ল্যাম্পের বিকল্প ইলুমিনেশনের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয়েছে। সময়ের হাত ধরেই মাঞ্জায় এখন কটনের জায়গা নিয়েছে নাইলন কিংবা মেটালিক সুতো। সরু, হালকা,কৃত্রিম, কিন্তু তার উপরে গুঁড়ো কাঁচের মাঞ্জা পড়লেই হয়ে উঠছে বিপজ্জনক।
ঘুড়ি উড়াতে গেলে নিজের হাত তো ক্ষতবিক্ষত হতেই পারে, ঘুড়ি ভোক্কাটা হয়ে বা উপড়ে গিয়ে প্রচন্ড ধারালো এই কৃত্রিম সুতো কোনওভাবে কারও মাথায়-গলায় পেঁচিয়ে গেলে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা। ক্ষতবিক্ষত হয়ে উল্টে পড়েও যেতে পারেন দু’চাকার আরোহী। অসম্ভব নয় মৃত্যুও। পরিবেশ এবং উদ্ভিদেরও বিপদ ডেকে আনছে চিনা মাঞ্জা। এই বিপদের হাত থেকে পথচারীদের বাঁচাতে এবারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে পুলিশ-প্রশাসন।