প্রতিবেদন : জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ঘাতক নাথুরাম গডসের প্রকাশ্যে বন্দনা করেছিলেন বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রজ্ঞা। ইংরেজ আমলে সারা দেশজুড়ে খাদির প্রচার করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। জাতির জনকের খুনির পূজারি সেই বিজেপিই এখন হঠাৎ করে তাঁর প্রতি ভক্তি দেখাতে খাদির প্রচারে নেমে পড়েছে। তবে সরাসরি নয়, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের অধীন আন্ডার গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডকে ঢাল করে এই কাজে নেমেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। সোমবার এমনই অভিযোগ করলেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন বা এনএমসি-র অন্যতম সদস্য ও সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, এনএমসি-র সদস্য হিসেবে বলতে পারি, এই বোর্ডের কাজ হল, মেডিক্যাল শিক্ষার পঠনপাঠন, গবেষণা এবং মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামোর দিকে নজর রাখা। পড়ুয়াদের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে স্বীকৃতি দেওয়া। মেডিক্যাল কলেজকে স্বীকৃতি দেওয়া ও বিদেশি শিক্ষার ওপর আলোকপাত করা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, ডাঃ অরুণা ভানিকার-সহ বোর্ডের ৫ সদস্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন। শান্তনু সেন বলছেন, হাসপাতালে চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা কী ধরনের পোশাক (Doctor- Nurses Dress) পরে যাবেন, হাসপাতালে কোন ধরনের চাদর, হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান ব্যবহার করা হবে সেই নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন বোর্ডের সদস্যরা। যা কোনও মতেই উচিত নয়, বলেই তাঁর দাবি।
আরও পড়ুন: বিজেপির জন্য বিশ্ব দরবারে মাথা হেঁট
প্রসঙ্গত, এই বোর্ডই কিছুদিন আগে দীর্ঘদিনের প্রচলিত ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ এর বদলে ‘চরক শপথ’-র পরামর্শ দিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিল। তবে বোর্ডের সভাপতি ও সদস্যদের কাছে এ বিষয় (Doctor- Nurses Dress) নিয়ে জানতে চাওয়ায় তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন এটা নেহাতই পরামর্শ, বাধ্যতামূলক নয়। এমনই দাবি করেছেন ডাঃ শান্তনু সেন। কিন্তু মুখে পরামর্শ বললেও ঘুরিয়ে এই কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেই অভিযোগ উঠছে। বোর্ডের সদস্যরা স্বীকার করেছেন, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পরামর্শ অনুয়ায়ী তারা এই পরামর্শ জারি করেছেন। উগ্র হিন্দুত্ববাদ ও শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক গৈরিকীকরণের এই প্রচেষ্টা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের এই প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধীতা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে।
শান্তনুবাবু বলেন, মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকে দুর্নীতিগ্রস্ত তকমা দিয়ে যে এনএমসি তৈরি হয়েছে তা নিজেদের কাজ না করে বিজেপির অ্যাজেন্ডা অনুযায়ী চলছে। ইতিমধ্যেই এনএমসি-র এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে একটি মেডিক্যাল কলেজকে লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।