কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্টে কয়েক বছর ধরে চলছে শ্রমিক শোষণ। বুধবার সংস্থার দুর্গাপুর ইউনিটের বাইরে কয়েক হাজার কর্মীর উপস্থিতিতে গণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠল তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন। জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি অভিজিৎ ঘটকের নেতৃত্বে আয়োজিত গণ অবস্থান থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক ওঠে।
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় গেরুয়া সন্ত্রাস! আক্রান্তদের দেখতে হাসপাতালে তৃণমূল নেতৃত্ব
অভিজিৎবাবু বলেন, ‘এই কারখানার ঠিকাশ্রমিকদের উপর কার্যত বুলডোজার চালাচ্ছে কেন্দ্র। যেখানে তাঁদের বেতন বাড়ার কথা সেখানে নিঃশব্দে বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ এই প্ল্যান্টে উদ্ভূত শ্রমিক-সমস্যা সম্পর্কে তৃণমূল শ্রমিক নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ পারিয়াল বলেন, ‘২০১৩ সালে ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে স্থির হয় ঠিকাশ্রমিকরা গ্যাস সিলিন্ডার লোডিং ও আনলোডিংয়ের জন্য ট্রাক-প্রতি ৯২৫ টাকা করে পাবেন। দিনে গড়ে ৮০ ট্রাক সিলিন্ডার তখন লোডিং-আনলোডিং হত। সেসময় ছিলেন ১১২ জন ঠিকাশ্রমিক। ২০১৬ সালে পরিচালন কর্তৃপক্ষ আলোচনা ছাড়াই ট্রাক-প্রতি মজুরি ৬৭৫ টাকা করে দেন। এখন মাত্র ৮৬ জন শ্রমিককে দিয়ে দ্বিগুণ শিফট কাজ করিয়ে ১৬০ ট্রাক সিলিন্ডার লোডিং-আনলোডিং করানো চলছে।’ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় শ্রম আইন অনুযায়ী পেরেনিয়াল নেচার বা সারা বছরই চালু থাকে এমন কাজ ঠিকাশ্রমিকদের দিয়ে করানো যায় না। সেক্ষেত্রে তাঁদের স্থায়ীকরণ বাধ্যতামূলক। অন্যথায় স্থায়ী শ্রমিকদের মতোই সমকাজে সমবেতন দেওয়ার কথা শ্রম আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে। কিন্তু কেন্দ্রের মোদি সরকার শ্রম আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। আইনত কোনও অবস্থাতেই কর্মীদের প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা আটকে রাখতে পারে না কোনও সংস্থা। কিন্তু বটলিং প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পিএফ এবং ইএসআই পর্যন্ত দিচ্ছে না।’ ধারাবাহিক শ্রমিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।