অংশুমান চক্রবর্তী : সাড়া জাগিয়েছে রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার ক্যাম্প। এই ক্যাম্প থেকেই বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম। আবেদনপত্রটি পূরণ করে ক্যাম্পেই আবার জমা দিচ্ছেন উপভোক্তারা। নিতে হচ্ছে আবেদনপত্রের প্রাপ্তিস্বীকার রশিদ। এই ফর্ম পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনেও। যে কোনও সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে নির্দিষ্ট ফর্ম ডাউনলোড করতে হচ্ছে। ফর্ম পাওয়া যাচ্ছে দুয়ারে সরকারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে। তারপর সেটা প্রিন্টআউটের পর পূরণ করে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে জমা দিতে হচ্ছে। জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করবেন রাজ্যের মহিলারা। প্রতিমাসে সরকারের ঘর থেকে সরাসরি আবেদনকারী মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা। এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন ২৫ থেকে শুরু করে ৬০ বছর বয়সী মহিলারা। মূলত তপশিলি জাতি-উপজাতি মহিলাদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা এবং সাধারণ মহিলাদের জন্য মাসে ৫০০ টাকা করে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেবে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন : রেড ডেভিলসে ফিরলেন রোনাল্ডো
এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, যে মহিলাদের নামে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড রয়েছে, তাঁরাই মূলত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পাবার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
আবেদনকারীদের ফর্মে ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নাম্বারও দিতে হবে। এছাড়াও নিজের সম্পূর্ণ ঠিকানা, বয়স, জাতিগত শংসাপত্র সমস্ত তথ্যই উল্লেখ করতে হবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদনপত্রে।
জেনে নেওয়া যাক, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আবেদন করতে হলে কী কী নথি লাগবে?
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আবেদনপত্র পূরণ করতে যাওয়ার সময় আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। ফর্মের সব চেয়ে উপরে আবেদনকারীদের রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি নির্দিষ্ট বক্সে লাগাতে হবে। ফর্ম পূরণ হয়ে যাওয়ার পর তার সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, আধার, ভোটার, রেশন কার্ড, মোবাইল নম্বর ছাড়াও ব্যাঙ্কের পাশবইয়ের প্রথম পাতার জেরক্স কপি দিতে হবে।তপশিলি জাতি উপজাতি শংসাপত্রের জেরক্স কপিও দিতে হবে। সব নথিপত্রের জেরক্স কপিতে নিজের সই করে প্রত্যায়িত করতে হবে উপভোক্তাদের।
আরও পড়ুন : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সহধর্মিণীর প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা
কারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না? যাঁরা আয়কর রিটার্ন জমা করেন। এছাড়াও যাঁরা সরকারি চাকরি করেন। যাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই। পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী অর্থাৎ পেনশন প্রাপকরা এই সুবিধা পাবেন না। যে সব মহিলারা সরকারি ভাতা পেয়ে থাকেন, এই সুবিধা পাবেন না তাঁরাও।
রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে চালু হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই প্রকল্পের আবেদনপত্র জমা দেওয়া নিয়ে মহিলাদের উৎসাহ দেখা গেছে চোখে পড়ার মতো। দুয়ারে সরকার শিবিরগুলির সামনে পড়েছে লম্বা লাইন। নাম নথিভুক্তির বিচারে ইতিমধ্যেই রেকর্ড গড়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। সংখ্যাটা আরও বাড়বে। কারণ এই ক্যাম্প চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।