প্রতিবেদন : বিহার বিধানসভায় সবচেয়ে বড় দলের তকমা হারাল বিজেপি। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা বিধায়কদের ভাঙিয়ে বিজেপি যখন নয়া সরকার গড়ার নেশায় মেতে উঠেছে তখন বিহারেও নিঃশব্দে চলল এক দলবদলের খেলা। বুধবার আসাউদ্দিন ওয়েইসির দল মিমের চার বিধায়ক যোগ দেন লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলে। তার ফলেই বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে বিজেপিকে টপকে গেল আরজেডি। এই মুহূর্তে আরজেডির বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে হল ৮০।
আরও পড়ুন-সবুজ শিবিরে যোগ দিচ্ছেন জয়ী নির্দলরাও
শেষ বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য লালুপ্রসাদের আরজেডি সবচেয়ে বেশি ৭৬টি আসনে জয়ী হয়েছিল। বিজেপি দুটি আসন কম পেয়েছিল। তবে বিকাশশীল ইনসান পার্টির তিন বিধায়ক গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ায় গেরুয়া দল বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে আরজেডিকে টপকে যায়। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে হয় ৭৭। কিন্তু সেই স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হল না। বিহারে ওয়েইসির দলের চার বিধায়ক সরাসরি আরজেডিতে যোগ দেওয়ায় লালুর দল ফের বিজেপিকে টপকে একক বৃহত্তম দলের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করল।
গত বিধানসভা নির্বাচনে মিমের টিকিটে ৫ প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। তার মধ্যে চারজনই দলবদল করায় তাঁরা দলত্যাগ বিরোধী নিয়ন্ত্রণ আইনে পড়ছেন না। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আনোয়ারুল ইসলাম নামে ওয়েইসির দলের আরও এক বিধায়ক খুব শীঘ্রই আরজেডিতে যোগ দেবেন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে পাহাড়ে আরও উন্নয়ন
তবে আরজেডির শক্তি বৃদ্ধি হওয়ায় বিহারে বিজেপি-জেডিইউ জোট সরকারের অশনিসংকেত দেখছে রাজনৈতিক মহল। কারণ ২৪৩ সদস্যের বিহার বিধানসভার শাসক জোটের বিধায়ক সংখ্যা ১২৭। অন্যদিকে আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে হল ১১৫। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে ৭ জন বিধায়ক কম। শাসক শিবিরের জোটে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝির দল হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার চার বিধায়ক। ওই চার বিধায়ক যদি কোনও কারণে মত বদলায় তাহলেই বড় ধরনের সমস্যায় পড়ে যাবে নীতীশ কুমার সরকার। অর্থাৎ যে কোনও মুহূর্তে বিজেপি জোট সরকার ভেঙেও যেতে পারে। বিজেপির পক্ষে সবচেয়ে অস্বস্তিকর বিষয় হল, ইদানীং জেডিইউ নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সম্পর্কের শীতলতা। নানা ইস্যুতে জোটসঙ্গী দুই দলের মতভেদ সামনে আসছে। তার উপর আবার কয়েকটি অনুষ্ঠানে নীতীশকে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। কয়েকটি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থানকে সমর্থনও জানিয়েছে লালুর দল। ফলে বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে খুব স্বস্তিতে নেই বিজেপি।