নয়াদিল্লি : ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ জোট কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর গত আট বছরে ক্রমশ কমছে সরকারি চাকরি। এতদিন বিরোধীরা বারবার এই অভিযোগ করলেও তা উড়িয়ে দিয়েছেন মোদি ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরির ক্ষেত্রে বিরোধীরা এতদিন ধরে যে কথা বলছে সেটা যে ধ্রুব সত্য তা প্রমাণ হল লোকসভায় সরকারের দেওয়া তথ্যেই।
আরও পড়ুন-মোদিরাজ্যে মৃত্যুমিছিল, মদ নিষিদ্ধ গুজরাতে বিষমদে মৃত বেড়ে ৪২
এক লিখিত উত্তরে, কর্মী, জনঅভিযোগ ও পেনশন মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, গত ৮ বছরে সরকারি চাকরির জন্য যে সংখ্যক আবেদনপত্র জমা পড়েছে তা থেকে ১ শতাংশেরও কম প্রার্থী বাছাই ও নিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত ২২.০৫ কোটি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। তার মধ্যে মাত্র ৭.২২ লক্ষ বা ০.৩৩ শতাংশকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এই ৮ বছরে সব থেকে বেশি নিয়োগ হয়েছে ২০১৯-২০ সালে। কারণ ওই বছর ছিল লোকসভা নির্বাচন।
আরও পড়ুন-দিন-রাত লাগাতার ৫০ ঘণ্টার ধরনায় তৃণমূল-সহ বিরোধীরা
২০২৪-এ আবার লোকসভা নির্বাচন। তাই এবার একটু আগে থেকেই ময়দানে নেমেছে সরকার। কেন্দ্র গত ১৪ জুন ঘোষণা করেছে যে, আগামী ১৮ মাসে মিশন মোডে ১০ লক্ষ লোক নিয়োগ করবে। তবে এই ঘোষণার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ৮ বছরে যেখানে মাত্র ৭ লাখের কিছু বেশি চাকরি পেয়েছে, সেখানে মাত্র দেড় বছরে কি ১০ লক্ষ চাকরি দেওয়া আদৌ সম্ভব? জিতেন্দ্র সিং লোকসভায় জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ সালে নিয়োগের জন্য সর্বাধিক সংখ্যক ১.৪৭ লক্ষ প্রার্থীর নাম সুপারিশ করা হয়। ওই বছরই লোকসভা নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে নির্বাচিত প্রার্থীর সংখ্যা ২০১৪-১৫ সাল থেকে ক্রমশই কমেছে।
আরও পড়ুন-যিনি পঞ্চায়েত সামলান, তিনি কৃষিকাজও করেন
একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৯-২০ সাল। ২০১৪-১৫ সালে নিয়োগের জন্য ১.৩০ লক্ষ প্রার্থীর সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে সংখ্যাটি ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে ২০১৫-১৬ সালে হয় ১.১১ লক্ষ। ২০১৬-১৭ সালে ১.০১ লক্ষ। ২০১৭-১৮ সালে ৭৬১৪৭। ২০১৮-১৯ সালে ৩৮১০০। ২০২০-২১ সালে ৭৮,৫৫৫ এবং ২০২১-২২ সালে ৩৮৮৫০। জিতেন্দ্র সিংয়ের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ৮ বছরে প্রাপ্ত আবেদনের সংখ্যার সঙ্গে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুপাত ০.০৭ শতাংশ থেকে ০.৮০ শতাংশ।