বার্মিংহাম: সোনা প্রায় জিতেই ফেলেছিলেন। শেষ মুহূর্তে পদস্খলন। স্ন্যাচিংয়ে ১১৩ কেজি তুলে শীর্ষে থাকলেও ক্লিন এবং জার্ক বিভাগে সেই স্থান ধরে রাখতে পারলেন না। ক্লিন এবং জার্ক বিভাগে প্রথম বার ১৩২ কেজি তোলার পর দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় ১৩৯ কেজি তুলতে গিয়ে চোট পান। কিন্তু চোট নিয়েই তৃতীয় বারের চেষ্টায় ভার তুলতে এসে ব্যর্থ হন। অল্পের জন্য সোনা অধরাই থেকে যায়। রুপো জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হল ভারত্তোলক সংকেত সরগরকে (Sanket Sargar)। মহারাষ্ট্রের ২১ বছরের তরুণের হাত ধরেই বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম পদক পেল ভারত। ৫৫ কেজি বিভাগে মোট ২৪৮ কেজি ওজন তুলে রুপো পেলেন সংকেত। এক কেজি ওজন বেশি (২৪৯ কেজি) তুলে সোনা জিতলেন মালয়েশিয়ার মহম্মদ আনিক বিন। সোনা হাতছাড়া করে হতাশ সংকেত (Sanket Sargar)। বললেন, ‘‘আমি খুশি পদক জিততে পেরে। কিন্তু সোনা জিততে চেয়েছিলাম। তাই রাগও হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: কমনওয়েলথ গেমসে রুপোর পদক জয় সঙ্কেতের, ব্রোঞ্জ গুরুরাজার, অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রীর
অন্যদিকে, ভারতকে দ্বিতীয় পদক এনে দিলেন ভারত্তোলক গুরুরাজা পুজারি (Gururaja Poojary)। ৬১ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ পেলেন তিনি। তরুণ সংকেত বাবার চা-পানের দোকানে প্রায়ই বসেন। লকডাউনের সময় সারা দেশ যখন স্তব্ধ, তিনি তখন অনুশীলন করতেন বাড়ির উঠোনে। এমনকী বাবার চা স্টলের পাশে বসে পান বিক্রিও করেছেন। সংকেতের বোন কাজলও ভারত্তোলক। গত মাসেই যুব গেমসে তিনিও সোনা জিতেছেন। সংকেতের গর্বিত বাবা মহাদেব বলছিলেন, ‘‘আমার যত কষ্টই হোক না কেন, ছেলে-মেয়েদের স্টলে বসতে দিই না। কারণ, ওদের সবাই খেলোয়াড় হিসেবেই জানে। কিন্তু ওরা আমার কষ্টের কথা ভেবেই দোকানে বসতে চলে যায়।’’
ছেলে সংকেতকে নিয়ে বাবা আরও বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই ও বেশ মুখচোরা। কিন্তু খেলার প্রতি ভালবাসা আর নাছোড় মনোভাব ছেলেকে এত দূর এনেছে।’’ সংকেত লকডাউনের সময় খেলা ছাড়ার কথা ভেবেছিলেন। বলেছেন, ‘‘লকডাউনের সময় বাবার ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছিল। আমি বাড়ির উঠোনে প্র্যাকটিস করার পাশাপাশি বাবাকে সাহায্য করেছিলাম।’’ এদিকে, কমনওয়েলথ গেমসে পদক জয়ের জন্য সংকেত ও গুরুরাজাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।