প্রতিবেদন : তুষারশৃঙ্গে তুষারপাত হতে পারে। কিন্তু হিমাঙ্কের নীচে যেখানে পারদ, সেখানে কখনওই বৃষ্টি তরল আকারে আকাশ থেকে নেমে আসবে না। কিন্তু সম্প্রতি এমনটাই হয়েছে গ্রিনল্যান্ডে। পরিবেশবিদরা বলছেন, এটি বিশ্ব উষ্ণায়নের ফল।
আরও পড়ুন : তালিবান সরকারের প্রধান বরাদর, রাশ আখুনজাদার হাতেই
ব্যতিক্রমী এই ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, অল্পস্বল্প বৃষ্টি নয়। বরং এমন বৃষ্টি হয়েছে যে, গলে গিয়েছে বরফস্তর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘The National Science Foundation’s Summit Station’এর তথ্য বলছে, বরফে ঢাকা শৃঙ্গে এই বৃষ্টি হয়েছে। এমন ঘটনা বিরল বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। টানা তিনদিন ধরে ব্যাপক হারে বৃষ্টি হয়েছে সেখানে। বরফে পড়েছে ৭০০ কোটি টন ওজনের জল।
ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর ন্যাশনাল আইস অ্যান্ড স্নো সেন্টারের বিজ্ঞানী টেড স্ক্যাম্বোস বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডে বৃষ্টি জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি গত ১০০ বছরের এক বিরল ঘটনা। বায়ুমণ্ডল যেভাবে দূষিত হচ্ছে, তা রুখতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরফ গলা জল সহজেই গোটা ফ্লোরিডাকে ভাসিয়ে দিতে সক্ষম। কিন্তু কেন এমন হল? জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। তার জেরেই ওই ঘটনা। তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫০ সালের পর এটাই তৃতীয় সর্বোচ্চ বরফ গলেছে সেখানে।
আরও পড়ুন : বেহাল অর্থনীতি, অতিমারিতে স্বর্ণঋণ নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে
প্রসঙ্গত, জুলাই মাসেও সেখানে অনেকখানি বরফ গলেছে। এখন সেখানে গ্রীষ্মকাল। তাই বরফ গলা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এর আগে ১৯৯৫, ২০১২, ২০১৯ সালেও বরফ গলেছে। কিন্তু যে হারে বরফ গলেছে ২০২১ সালের গ্রীষ্মে, তা আশঙ্কার কারণ বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তথ্য বলছে, ২০২১ সালের এই গ্রীষ্মে সবচেয়ে বেশি বরফ গলেছে। আর বৃষ্টিপাত? তা তো সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বাতাসের তাপমাত্রা বাড়ায় এই অঞ্চলটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমনিতেই ১৯৯৪ সাল থেকে গ্রিনল্যান্ডে এত বরফ গলেছে যে তা থেকে স্বাভাবিক নিয়মেই জলের উচ্চতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। তথ্য বলছে, গ্রিনল্যান্ডে এই হারে বরফ গলতে থাকলে পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আরও ৬ মিটার বাড়বে। ফলে বিশ্বের সমস্ত উপকূলীয় অঞ্চল দ্রুত জলের তলায় যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।