প্রতিবেদন : ‘শবর পিতা’র কাহিনি অজানা নয় অনেকেরই। আসল নাম অরূপ মুখোপাধ্যায়। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক কনস্টেবল। আগে ছিলেন সাউথ ট্রাফিক গার্ডে। এখন গড়িয়া ট্রাফিক গার্ডে। অরূপবাবুরই সমাজসেবামূলক কাজকর্মের কাহিনি লিখে মার্কিনমুলুকের টেক্সাসে স্কুলে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান পেয়েছে বাঙালি ছাত্রী অরিত্রা চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন- হাওড়ায় এবার দুয়ারে সরকারের স্থায়ী শিবির
প্রবন্ধে সমাজসেবার কথা বিশেষভাবে বর্ণনা করা হলেও বিশেষভাবে ঊল্লেখ করা হয়েছে অরূপ মুখোপাধ্যায়ের কর্তব্যপরায়ণতা, সততা এবং দক্ষতার কথাও। এককথায় বলা যেতে পারে, তাঁর জীবনীটাই বেশ আকর্ষণীয় ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছে ছোট্ট অরিত্রা। কী সেই জীবনী, কেমন সেই সমাজসেবা? অরূপবাবুর গ্রামের বাড়ি পুরুলিয়ার পুঞ্চায়।
কলকাতা পুলিশে কাজ করলেও মাটির টানে বারবার তিনি ছুটে যান সেখানে। কিন্তু নিছক ছুটি কাটাতে বা বিশ্রাম নিতে নয়, এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদও ছিল তাঁর মনে। এই সদিচ্ছাই তাঁর মনে জন্ম দেয় এক অভিনব পরিকল্পনার। দেশের বাড়িতে নিজের উদ্যোগেই তিনি গড়ে তোলেন এক অবৈতনিক আবাসিক স্কুল। নাম দেন ‘পুঞ্চা নবদিশা মডেল স্কুল’।
আরও পড়ুন- বোকা বানাতে চাইছে, দিল্লি পুলিশকে ধুয়ে দিলেন বিচারক
এই উদ্যোগ শিক্ষার নতুন আলোর দিশা দেখায় এলাকার অর্থনৈতিক অনগ্রসর শবর শিশুদের। তারপরে কেটে গেছে বেশ কয়েকটা বছর। অরূপ মুখোপাধ্যায়ের এখন এলাকায় পরিচিতি ‘ শবর পিতা’ নামে। কিন্তু কেমন করে অরূপবাবুর কথা জানলো সুদূর টেক্সাসের বাঙালি ছাত্রী অরিত্রা? বছরখানেক আগে বাবা অরিন্দম চক্রবর্তীর সঙ্গে কলকাতায় এসেছিল সে।
এখান থেকেই পুরুলিয়ায় বেড়াতে গিয়ে পুঞ্চাগ্রামে অরূপবাবুর সামাজিক কাজকর্ম চোখে পড়ে অরিন্দমবাবু এবং তাঁর পরিবারের। সব দেখেশুনে মুগ্ধ হয়ে কাজের সূত্রে বিদেশে ফিরে যান সপরিবারে। তারপরে অতিসম্প্রতি স্কুলের এক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় এই বিষয়টাই নিজের মতো করে ফুটিয়ে তোলে অরিত্রা। শিক্ষক মহলে খুবই প্রশংসিত হয় তার লেখা। এবং স্বীকৃতি পায়। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে অরিত্রা চক্রবর্তী। এই সুখবরটা টেক্সাস থেকে কলকাতায় অরূপ মুখোপাধ্যায়কে জানান অরিত্রার বাবা অরিন্দম চক্রবর্তী। স্বাভাবিকভাবেই দারুণ খুশি দু’জনেই।