চন্দন মুখোপাধ্যায়, কাটোয়া: ‘এইটা কী রাগ খুড়োমশাই?’ ‘এখন যে সক্কালবেলা বাপ। আহির-ভৈরব বাজাতে হয়। সাঁঝেরবেলায় ছায়ানট।’ কার্তিক তখন ছোট্টটি। কাকা তল্লাটের বিখ্যাত সানাইবাদক ধনঞ্জয় দাসের কাছে এভাবেই সানাই-তালিম শুরু কার্তিকের। ভাগীরথী-ঘেঁষা কালনা মহিষমর্দিনীতলার নহবতখানায় বাজাতে আসা কার্তিক দাস শোনাচ্ছিলেন বাজনা শেখার শুরুর পর্ব। নহবতখানা থেকে কার্তিকদের সানাইয়ের সাবেক রাগ-রাগিণীর সুরের আবেশ জড়িয়ে ধরেছে কালনার বাতাস-আকাশ।
আরও পড়ুন-বাংলাভাষার দাবিতে
নহবতখানার শতবর্ষপূর্তি। তাই বাজানোর ডাক ফেলতে পারেননি। শতবর্ষ, তাই রংবেরংয়ের আলোয় মুড়ে ফেলা হয়েছে প্রায় ৪০ ফুট উঁচু নহবতখানা। ১৯২২-এ তৈরি করেছিলেন তল্লাটের নামী কারিগর প্রিয়লাল মিস্ত্রি। ঝড়-বাদলে কিছু কারুকার্য নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেসব মেরামত করে নতুন রঙ হয়েছে। তিন পুরুষ ধরে পুজোয় নহবত বাজাচ্ছেন কালনা বারুইপাড়ার বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির কার্তিক দাস ও তাঁর দলবল। আদি বাড়ি মউগ্রামে। বাবা পাঁচুগোপাল দাস ঢাক বাজাতেন। কাকা ধনঞ্জয় ছিলেন সানাই-বাদক। সুররসিকরা নাম দিয়েছিলেন ‘বিসমিল্লা’। কাকার সঙ্গে ফি-বছর কালনায় আসতেন ছোট্ট কার্তিক। বড় হয়ে নিজেই নহবতের দল খুলেছেন। সন্ধের মুখে কার্তিক ছায়ানট বাজাচ্ছিলেন।