সোমবার, মেয়ো রোডে TMCP-র সমাবেশ থেকে বিরোধীদের ধুয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMCP- CM Mamata Banerjee)। এদিন তাঁর আক্রমণে মূল লক্ষ্য ছিল বিজেপি (BJP)। তবে, বাম কংগ্রেসকেও তুলোধনা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। ধৃত দলীয় নেতাদের নিয়ে প্রসঙ্গে টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”পার্থ-কেষ্ট চোর কি না, তা আইন বলবে। কিন্তু এসব কী চলছে? ববি চোর, অভিষেক চোর, মমতা চোর? আমরা সবাই চোর! আর বিজেপির সবাই সাধু?” তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ”আজ অভিষেক এখানে বক্তব্য রাখল আগামিকালই ওকে নোটিশ ধরাতে পারে সিবিআই।” কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ”ওর বাচ্চাটাকেও রেওয়াত করা হবে না”।
এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMCP- CM Mamata Banerjee) পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির হিসেব চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। ২০১১ সালের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সম্পত্তি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ মামলাকারীর। কীভাবে সম্পত্তির পরিমাণ এত বাড়ল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমাকে একজন বলছে আপনার অনেক সম্পত্তি বেড়েছে সঙ্গে আপনার পরিবারেরও।“ এরপরেই, নিজের আয়ের খতিয়ান দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। “আমি এক পয়সাও নিই না। আমি যা টাকা পেতাম একটাও টাকা নিইনি। আমি ১ লক্ষ টাকা করে পেনশন ১২ বছর ধরে নিই না, হিসেব করে দেখুন কত টাকা হয়! ৯১ সালের পর থেকে আমি কখনও এক্সিকিউটিভ ক্লাসে চড়িনি।“ নিজের লেখা প্রসঙ্গে বলেন, “আমার বই লেখা নিয়েও অসভ্যতামি চালাচ্ছে। বইমেলায় গিয়ে দেখো কার বই বেস্ট সেলার? ১০০০ কবিতার বই লিখে দেখান। আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম সমাজসেবা করব বলে” একই সঙ্গে তিনি জানান, ”ওগুলো কি আমার সম্পত্তি? আমরা সবাই আলাদা আলাদা পরিবার। মায়ের দায়িত্ব ছিল আমার। সকলের পরবর্তী প্রজন্ম হয়েছে, তারা উপার্জন করেছে। আমার তো সব ডকুমেন্ট দেওয়াই আছে। আমি বলি, এই মামলা ইন্টারন্যাশনাল আদালতে হোক।”
আরও পড়ুন: ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র করুন অথবা ইস্তফা দিন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
বাম জমানায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, বাম জমানায় অনেকের পয়সা নিয়ে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই ফাইল-আলমারি সব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে- অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সিপিআইএম (CPIM) ৩৪ বছর তছনছ করেছ, বিজেপি কী করেছ? শুধু ধার আর ধার সবকিছুতেই জিএসটি চাপাচ্ছ- তোপ দাগেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। তৃণমূল আমলে কত চাকরি হয়েছে তার খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৭০ পদে শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। দেড় কোটি ছেলেমেয়েকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। দেশে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব বাড়লেও বাংলায় ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান বেড়েছে। দেউচা পাচামি-সহ হাজার প্রকল্পে আরও কর্ম সংস্থান হবে। “১০০ দিনের কাজে আমরা এক নম্বর বলে টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এটা আমরা নয়, ভারত সরকারই বলেছে। সবকিছুতে টাকা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে“।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে উঠে আসে ইন্দিরা গান্ধী-রাজীব গান্ধী প্রসঙ্গও। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, রাজীব, ইন্দিরাদেরও অনেক সমর্থক ছিল কিন্তু তাঁদেরও এক সময় হারতে হয়েছে। ফের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৪-এ বিজেপি থাকবে না। কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “আমাদের আজ গালি দিচ্ছ, কাল তোমরা বিদায় নেওয়ার পর আমরা তালি দেব।“