প্রতিবেদন : যতটা দৃপ্ত ভঙ্গিতে ইডি-র দফতরে ঢুকেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় , ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরও একইভাবে ইডি-র দফতর থেকে বেরলেন তিনি। আর বেরিয়েই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দাগলেন তোপ। বললেন, “যদি মনে করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে ঘরে বসিয়ে রাখা যাবে, তাহলে ভুল করেছে। জীবন দেব, কিন্তু মাথা নোয়াব না”।
এদিন একের পর এক তোপ দাগেন অভিষেক। তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই বলছি ১০ পয়সার দুর্নীতিও ধরা পড়লে তথ্য সামনে আনুন। ইডি-সিবিআই লাগানোর দরকার নেই, প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসির কাঠে ঝুলব”। এরপর নাম না করে তিনি বলেন, “ভিডিও-তে পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, কে হাত পেতে টাকা নিয়েছে। অথচ নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলে যাওয়ার পরেই তাঁকে ডাকা হচ্ছে না। রাজনৈতিক কারণেই কি ছাড় দেওয়া হয়েছে?” অভিষেক বলেন, “সকাল ১১ টা থেকে আমায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তে সহায়তা করেছি। প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছি। ইডি-র আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তাঁরা নিজেদের কাজ করেছেন। ভিতরে কী কথা হয়েছে সেটা প্রকাশ্যে বলব না। তবে, যাঁদের দিয়ে বিজেপি এসব কাজ করাচ্ছে, তাঁরাও এতে খুশি নন।” স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন : তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর রহস্যমৃত্যু
এরপরই সরাসরি বিজেপি থেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিষেক বলেন, “যেখানেই যাব, সেখানে বিজেপিকে হারাব”। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য-প্রমাণ থাকলে প্রকাশ্যে আনুন। বিজেপি যদি মনে করে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে ঘরে বসিয়ে রাখা যাবে, তাহলে ভুল করছেন। যাই করুন না কেন, সামনের ভোটে তৃণমূল জিতবেই”।
“কাপুরুষরা আমাদের হারাতে পারেনি বলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।” অভিষেকের চ্যালেঞ্জ “২০২৪-এ বিজেপিকে হারাবই”।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে এসে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতা অমিত শাহ বলেছিলেন, 200 পার করবেন। অথচ সত্তরেই তাঁদের বিজয়রথের চাকা আটকে গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, “ইডি-সিবিআই-আয়কর, যা কিছু আছে, ব্যবহার করতে পারেন। যে যে রাজ্যে যাব, সেখানেই বিজেপিকে হারাব।” বহু বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন: বিজেপি-সন্ত্রাস, আক্রান্তদের পাশে দলীয় নেতৃত্ব
দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পরেও সমান দৃপ্ত ভঙ্গি এবং বিজেপির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিষেক বার্তা দিলেন ভয় দেখিয়ে তাঁকে আটকে রাখা যাবে না। দলে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর যেভাবে তিনি জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করছেন, তা আগামী দিনেও একইভাবে এগিয়ে চলবে।