প্রতিবেদন : রাজ্যের মুকুটে নয়া পালক। আর্থিক ঋণের বোঝা কমানোর ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে সেরার স্বীকৃতি পেল বাংলা। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ফাইনান্স অ্যান্ড পলিসির (এনআইপিএফপি) রিপোর্ট। যে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৫-র এপ্রিল থেকে ২০১৯-র মার্চ— টানা এই চার অর্থবর্ষে ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে গোটা দেশে ১ নম্বর স্থান দখল করেছে বাংলা। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরবর্তীকালে ঋণ বাড়লেও তার পরিমাণ ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষের থেকে কম। তবে সিপিএমের পুরনো বিপুল দেনার দায় এতটাই বেশি যে প্রতি ১০ টাকা আয়ের মধ্যে ২ টাকা চলে যাচ্ছে ধারের কিস্তি মেটাতে। এই রিপোর্টের পর নিশ্চিত ভাবেই মুখ পুড়ল বিরোধীদের। বিশেষ করে যেসব সিপিএমের নেতারা রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে টিভির পর্দায় ভাষণ দেন, তাঁদের জমানাতেই তাঁরা এত ঋণের বোঝা রেখে গিয়েছিলেন যে, সেই বোঝা এখনও বইতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারকে। এরপরেও কোন মুখে কথা বলবে সিপিএম!
আরও পড়ুন-সঞ্জীব-তীর্থঙ্করের ঘটনার পুনরাবৃত্তি, অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, খুন দুই ছাত্র
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ফাইনান্স অ্যান্ড পলিসি, সংক্ষেপে এনআইপিএফপি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা স্বশাসিত একটি গবেষণা সংস্থা। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও তহবিলে অর্থ বরাদ্দ, কর কাঠামো, শুল্ক ব্যবস্থার মতো জাতীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে গবেষণা ও সরকারের আর্থিক নীতি নির্ধারণের দিশা দেওয়াই এই সংস্থার কাজ।
দেশের ১৮টি রাজ্যের চলতি বছরের বাজেট পর্যালোচনা করে এনআইপিএফপি বলেছে, ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষ থেকে চার অর্থবর্ষে দেশের যে পাঁচটি রাজ্য জিডিপির তুলনায় ঋণ কমিয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলা শীর্ষে। পাঞ্জাবে জিডিপির তুলনায় ঋণের পরিমাণ যেখানে বেড়েছে ১৫ শতাংশ, সেখানে ৩৩.৮৭ শতাংশ থেকে কমে বাংলার ঋণের ভার নেমে এসেছে ৩০.৮৮ শতাংশে। রাজ্যর অর্থ মূলত স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে কর আদায় ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতি চালু করাই এর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-কার সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু? টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখুক সিবিআই
মঙ্গলবার এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এটা বারবার মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকেই ঋণজালে জড়িয়ে। কারণ, বাম সরকারের পরের পর ভুল আর্থিক নীতি এর জন্যয় দায়ী। এখন কেন্দ্রকেও মানতে হচ্ছে, তাদের রিপোর্টে বলতে হচ্ছে যে, ঋণ শোধের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সফল। একেবারে উপরের দিকে রয়েছে। কিন্তু যেহেতু পুরনো ঋণের জালে জড়িয়ে রয়েছে, তাতে ঋণশোধ করেও লাভ নিতে পারছে না সরকার।
আরও পড়ুন-যুবভারতীতে এএফসি কাপের জোনাল সেমিফাইনাল, ডুরান্ড ভুলে সতর্ক মোহনবাগান
কুণালের সংযোজন, রাজ্যের আর্থিক কাঠামো অন্তঃসারশূন্য করে রেখে গিয়েছে বাম সরকার, আর বৈষম্য্মূলক আচরণের জন্য বাংলা থেকে প্রাপ্যা এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি সেটা কেন্দ্র দিচ্ছে না। অর্থাৎ অতীতেত পাপ করে গিয়েছে সিপিএম, আর এখন পাপ করছে বিজেপি। এরা হাতে হাত মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কষ্ট দিয়ে নিজেদের রাগ মেটাচ্ছে। কুণালের কথায়, ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। কারণ মানুষের সংখ্যাছ বেড়েছে। ফলে পরিষেবা-উন্নয়নের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমন আর মানুষের হাতে নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে। আর বাংলার প্রাপ্যম টাকা না দেওয়ার কেন্দ্রের প্রবণতা, বৈষম্য বাংলার মানুষকে ভুগতে হচ্ছে।