কাবুল : একদিন আগেই তালিবান দাবি করেছিল তারা পঞ্জশির দখল করেছে। যদিও নর্দার্ন অ্যালায়েন্স তালিবানের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। বরং পঞ্জশির ও বাঘলনের সাধারণ মানুষও নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যোগ দিয়ে তালিবানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। ঘটনার জেরে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স বাঘলন প্রদেশের পুল-ই-হেসার তালিবানের থেকে কেড়ে নিয়েছে। পাশাপাশি দেহ সালাহ, আন্দারাব ও বানোতেও চলছে জোরদার সংঘর্ষ। অভিযোগ উঠেছে, তালিবান সেখানে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের যোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে মুঠো মুঠো টাকা দিয়ে কিনতে চাইছে।
আরও পড়ুন- দেশ বেচছেন মোদি, বাংলা গড়ছেন মমতা
এরইমধ্যে দু-দু’বার পিছিয়েছে তালিবানের সরকার গঠন। শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার সময় আফগান নতুন সরকার ঘোষণা করেছে তালিবান। নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে উঠে এসেছে একেবারেই অপরিচিত মোল্লা হাসান আকুন্দের নাম। তালিবান প্রধান হিবাতুল্লা আখুনজাদা নিজে আকুন্দের নাম প্রস্তাব করেছেন বলে খবর। আকুন্দকে সহায়তার জন্য উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেতে চলেছেন মোল্লা গনি বরাদর ও মোল্লা আবদুল সালাম হানফাউ। আকুন্দ পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
এদিকে, পঞ্জশিরে আহমেদ মাসুদের বাহিনীর উপর হামলা চালাতে তালিবানরা পাকিস্তানি বিমানের সাহায্য নিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, পাক বিমান মাসুদের বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে গিয়ে নিশানায় ভুল করে তালিবানের ঘাঁটিতেই বোমাবর্ষণ করে ফিরে যায়। কেউ কেউ মনে করছেন, মাসুদকে মদত জোগাচ্ছে তাজাকিস্তান। তাই তাজিক বায়ুসেনা এই হামলা চালাতে পারে।
আরও পড়ুন- অভিষেকের প্রশ্নবাণে উল্টোচাপে বিজেপি
মঙ্গলবার মাসুদ নতুন করে অভিযোগ করেছেন, তালিবান যোদ্ধাদের উপর হামলা চালাচ্ছে পাকসেনা। পাক সেনাবাহিনীর একমাত্র লক্ষ্য হল পঞ্জশিরকে তালিবানের হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু শরীরে শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত তাঁরা তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। সূত্রের খবর, অ্যালায়েন্সের যোদ্ধারা হিন্দুকুশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা এখনও পর্যন্ত নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তালিবান চেষ্টা করেও সেই সমস্ত এলাকা নিজেদের দখলে আনতে পারেনি।
পাকিস্তান মুর্দাবাদ স্লোগান কাবুলে : পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্রমশই ক্ষোভ বাড়ছে আফগান নাগরিকদের। মঙ্গলবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বহু মানুষকে রাস্তায় নেমে স্লোগান দিতে দেখা যায়। কাবুলে পাক দূতাবাসের বাইরে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ওই সমস্ত বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন প্রচুর সংখ্যক মহিলা। ওই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালায় তালিবান যোদ্ধার। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর এখনও জানা যায়নি। মনে করা হচ্ছে, ওই ঘটনায় বেশ কিছু মানুষ জখম হয়েছেন। এদিনের বিক্ষোভ সমাবেশে পুরুষের তুলনায় মহিলার সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। তাঁদের সকলের মুখেই ছিল পাকিস্তান ও আইএসআই বিরোধী স্লোগান। আফগান নাগরিকরা দেশে পাক হস্তক্ষেপ চান না।
৪ মার্কিন নাগরিক উদ্ধার : ৩০ অগাস্ট রাতে আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। যদিও সে দেশে এখনও বেশ কিছু আমেরিকান নাগরিক আটকে আছেন। আটকে থাকা ওই সব নাগরিকদের মধ্যে সোমবার রাতে চারজনকে উদ্ধার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাকিদেরও একইভাবে এবং যত শীঘ্র সম্ভব উদ্ধার করা হবে বলে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে। এদিন স্থলপথে ওই চার মার্কিন নাগরিককে উদ্ধার করে তাঁদের কাতারে নিয়ে আসা হয়েছে।