সংবাদদাতা, মন্দিরবাজার : পুজোর (Durga Puja- Naskarbari) বাকি মাত্র ১০ দিন। রীতি মেনে তাই এলাকার প্রাচীন পুজোগুলির অন্যতম মন্দিরবাজার নস্করবাড়িতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ, সঙ্গে পুজো প্রস্তুতি। ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে নবাবি ইতিহাস। এই পুজোর রীতি কিছুটা আলাদা। দেবীকে নৈবেদ্য হিসাবে দেওয়া হয় ৬ মন চাল। শুরুতে বাড়ির ৬ ভাই প্রত্যেকেই ১ মন করে চাল দিতেন। সেই থেকে চালু এই নিয়ম। বর্তমানে পুজোর জলুস কিছুটা হারালেও পুরনো রীতি মেনে এখনও দেওয়া হয় ৬ মন চাল। দুর্গা (Durga Puja- Naskarbari) ও রাধাগোবিন্দ একসঙ্গে পূজিত হন এই বাড়িতে। বাংলার নবাব হুসেন শাহের সময় রায়দিঘির ছত্রভোগের বাসিন্দা রামচন্দ্র লশকর ছিলেন নবাবের দেওয়ান। ভাল কাজ করায় নবাব খুশি হয়ে তাঁকে ‘খাঁ’ উপাধি দেন। সেই থেকে তাঁরা উপাধি হিসাবে ব্যবহার করতেন খাঁ লশকর। তিন পুরুষ ধরে এই পদবি ব্যবহারের পর রামচন্দ্রের পৌত্র রামজীবন খাঁ লশকর উপাধি ত্যাগ করে নস্কর উপাধি নেন। তিনি ও তাঁর ৫ ভাই চলে আসেন মন্দিরবাজারের জগদীশপুরে। এর ২৫ বছর পর ৬ ভাই মিলে ১৭১৩ সালে পুজো শুরু করেন সেখানে। সেই থেকে এলাকায় ‘৬ বুড়োর পুজো’ হিসাবে পরিচিতি পায় এই পুজো। নবাবি আমলে মহাধুমধাম করে হওয়া পুজোর জলুস আজ কিছুটা কমেছে। তবে তা ইতিহাস ও ঐতিহ্যে কোনও দাগ বসাতে পারেনি। আজও পুজোর দিনগুলিতে গমগম করে নস্করবাড়ি প্রাঙ্গণ। প্রাচীন রীতিনীতি মেনে আজও হয় পুজো। ক’বছর করোনা মহামারীর কারণে ভিড় ছিল কম। তবে এবছর এই ঐতিহাসিক পুজো দেখতে ভিড় যে ফের বাড়বে, তা বলার অবকাশ রাখে না।
আরও পড়ুন-অধিকারীদের ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন কাউন্সিলরের খোঁজে পুলিশ