প্রতিবেদন : দেশের মধ্যে এই প্রথম মৃত ব্যক্তির হাত জোড়া লাগল জীবিত ব্যক্তির শরীরে। ২০ জন শল্য চিকিৎসাবিদ এবং ১০ জন অ্যানাসথেসিস্টের উপস্থিতিতে ১৮ ঘণ্টা ধরে চলল অপারেশন। শেষ পর্যন্ত অমরেশ নামে এক যুবকের দেহে জোড়া হল মৃত ব্যক্তির হাত। এই বিরল অস্ত্রোপচারের পর অমরেশ সুস্থ আছে বলে জানা গিয়েছে। বছর পাঁচেক আগে বিদ্যুতের তার সারাই করতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন অমরেশ। তাঁর দুই হাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
আরও পড়ুন-শিলিগুড়ি যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের টিম
প্রাণে বেঁচে গেলেও অমরেশ তাঁর দুটি হাতই খুইয়েছিলেন। তাঁর ডান হাত কনুইয়ের কাছ থেকে ও বাম হাত কাঁধ থেকে বাদ দিতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। সংসার চালানোর জন্য ওই যুবক চেয়েছিলেন, যদি কোনওভাবে তাঁর হাত প্রতিস্থাপন করা যায়। কিন্তু দাতার অভাবে সেই ইচ্ছে এতদিন পূরণ হয়নি। হঠাৎই এক আশ্চর্যজনক সুযোগ আসে তাঁর জীবনে। তিরুবনন্তপুরমে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৫৪ বছর বয়সি এক প্রৌঢ়ের। মৃতের বাড়ির লোকজন তাঁর অঙ্গ দান করতে সম্মত হন। তার পরই মৃতের দেহ থেকে হাত নিয়ে তা অমরেশের দেহে বসানোর সিদ্ধান্ত নেন কোচির এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন-সাফাই অভিযানে সব পুরসভাকে নির্দেশ, ডেঙ্গি রুখতে চাই গণ-আন্দোলন
এই অস্ত্রোপচার শুধু কঠিনই নয়, বিরলও বটে। এই ধরনের অস্ত্রোপচারের কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতাও ছিল না চিকিৎসকদের। কারণ দেশে এই ধরনের অস্ত্রোপচার এর আগে হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যে হাত কনুই থেকে বাদ গিয়েছিল, সেই হাতটি জুড়তে বিশেষ সময় লাগেনি। আসল পরীক্ষা ছিল কাঁধ থেকে বাদ যাওয়া হাতের জায়গায় নতুন হাত বসানো। কারণ দুর্ঘটনার সময় বিদ্যুতের ঝটকায় অমরেশের স্নায়ু মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায় অস্ত্রোপচারটি। তবে ১৮ ঘণ্টার চেষ্টায় সফল হয়েছে অস্ত্রোপচার। সুস্থ আছেন অমরেশ। চিকিৎসকরা বলছেন তাঁর স্বাভাবিক জীবন যাপনে আর কোনও সমস্যা নেই। তবে আপাতত কিছুদিন ভারী জিনিস তুলতে বা বহন করতে পারবেন না তিনি। বছর দেড়েক টানা ফিজিওথেরাপি করতে হবে।