লন্ডন : অঝোরে কাঁদছেন তিনি। কিন্তু মুখে হাসি! রজার ফেডেরার (Roger Federer Farewell) বললেন, ‘‘এটা আনন্দের কান্না।’’ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রাফায়েল নাদালের চোখেও জল। সুইস কিংবদন্তির কাঁধে হাত রেখে সান্ত্বনা দিচ্ছেন নোভাক জকোভিচ। পাশে দাঁড়ানো অ্যান্ডি মারে, স্টেফানোস সিসিপাস, মাতেও বেরেত্তিনি, ক্যাসপার রুডরা কান্না চাপছেন। লন্ডনের ও-টু অ্যারিনায় এমনই অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী রইলেন টেনিসপ্রেমীরা।
পেশাদার জীবনের শেষ এটিপি ম্যাচটা সদ্য ৪-৬, ৭-৬ (৭/২), ১১-৯ সেটে হেরেছেন। সেটা শেষ হওয়ার পর গোটা গ্যালারি দাঁড়িয়ে উঠে বিদায়ী অভিবাদন জানাল রাজা রজারকে। মাইক হাতে নিয়ে একটা লম্বা নিঃশ্বাস ছাড়লেন ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফির মালিক। বললেন, ‘‘২৪টা বছর কীভাবে কেটে গেল! আমি খুশি, কোনও দুঃখ নেই।’’ ফেডেরার যোগ করেছেন, ‘‘আরও একবার জুতোর ফিতেটা বাঁধলাম। শেষবারের মতো। দুর্দান্ত একটা ম্যাচ দিয়ে কেরিয়ার শেষ করলাম। সমর্থক, বন্ধু, পরিবার ও সতীর্থদের সামনে বিদায় নেওয়ার অনুভূতিটা অসাধারণ।’’
আরও পড়ুন-ঝুলনকে নিয়েই টস হরমনের, কেঁদে ফেললেন অধিনায়ক
নাদালকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে আরও একবার আবেগের বিস্ফোরণ হল। ফেডেরার (Roger Federer Farewell) বলেন, ‘‘রাফার সঙ্গে খেলাটা দারুণ উপভোগ করলাম। এখানে যে সব কিংবদন্তিরা রয়েছেন, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ। রাফাকেও।’’ সুইস মহাতারকা বলেই চলেছেন, ‘‘আমি একা হতে চাইনি। গোটা দলকে পাশে পেয়েছি। নিজেকে একটা দলের অংশ বলে মনে হচ্ছে। যেটা সিঙ্গলস খেললে মনে হত না।’’ এগিয়ে এলেন স্ত্রী মিরকা। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কিছু একটা বললেন। কিন্তু ফেডেরারের আবেগ যেন বাঁধভাঙা। দুই ছেলে ও দুই মেয়েও তখন তাঁর পাশে। এগিয়ে এলেন বাবা এবং মাও। সবাইকে জড়িয়ে ধরে আরও একবার কাঁদলেন। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, ‘‘এত মানুষ আমার জন্য গলা ফাটাচ্ছে, এটা আমার সেরা প্রাপ্তি। স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, বাবা-মা সবাই রয়েছে। মিরকা (স্ত্রী) আমাকে অনেক আগেই থামিয়ে দিতে পারত। কিন্তু সেটা করেনি। বরং উৎসহ দিয়েছে।’’ এগিয়ে এলেন সতীর্থরা। কাঁধে তুলে নিলেন ফেডেরারকে। জকোভিচদের কাঁধে চেপে মুখে হাসি ফেডেরারের। পুরো কোর্ট সতীর্থদের কাঁধে চেপেই ঘুরলেন। হাত নাড়লেন গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে। এক কথায় রাজার মতোই বিদায় নিলেন ফেডেরার।