শুভাশিস প্রামাণিক, টোকিও: উদীয়মান সূর্যের দেশে আকাশে ভাসে না শরতের মেঘ। তবে মা দুর্গা আসেন সাড়ম্বরেই। একবছর আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় আয়োজন। পুজোয় জাপানিদের অংশগ্রহণও চোখে পড়ার মতো। ওঁরাও আমাদের সঙ্গে মেতে ওঠেন ঢাকের তালে। খান পোলাও, ছোলার ডাল, চাটনি, মিষ্টি। উপভোগ করেন। সপ্তাহে একদিনই হয় পুজো।
আরও পড়ুন-বিসর্জিত কালী
এইদিনই সপ্তমী থেকে দশমী চারদিনের আচারই মানা হয়। ইন্ডিয়া(বেঙ্গল) কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, জাপান পুজোর আয়োজন করে। এবার আমাদের পুজো ১১ বছরে পড়ল। এবছর পুজো হবে ৮ অক্টোবর। দেবীর আরাধনার দায়িত্ব এবার দেবীদের ওপরই। মহিলা পুরোহিত করবেন পুজো। এই নিয়ে চলছে বিরাট প্রস্তুতি। পুজোর অন্যান্য আয়োজন আমরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিই। ফল কাটা, মালা গাঁথা, মণ্ডপ তৈরি। তবে এখানে একটিই চিন্তার বিষয়। তা হল সময়মতো হল ভাড়া পাওয়া। কারণ, আমাদের দেশের মতো প্রবাসে তো আর প্যান্ডেল করে পুজো হয় না। একটি হল ভাড়া করতে হয়। আগে জাপানে দুর্গাপুজো তেমন হত না। এখন ধীরে ধীরে সংখ্যা বেড়েছে। একাধিক বাঙালি অ্যাসোসিয়েশন পুজো করে। তাই হল পাওয়া একটু সমস্যা হয়। হল বুক করার পরে লটারি হয়।
আরও পড়ুন-মা দুর্গা পূজিত হচ্ছেন গ্রাম্যবধূর বেশে
লটারিতে নাম উঠলে তবেই পাওয়া যায়। পাড়ার মণ্ডপগুলিতে যেমন প্রায় ছ’মাস আগে থেকেই পুজোর তোড়জোড় শুরু হয় তেমনই এখানেও তিনমাস আগে থেকেই হয় মিটিং। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেনু সবকিছুই স্থির হয়ে যায়। আসলে আমরা সারাবছর ধরে একটু একটু করে পুজোর কাজ এগিয়ে রাখি। তবে করোনার পর এখানে পুজোর চিত্রটা অনেক বদলে গিয়েছে। এখন সবকিছুতেই জাপান সরকার বেঁধে দিয়েছে নিয়ম। আগে প্রায় ৫০০ জনের সমাগম হত পুজোয়। কিন্তু এখন এতজন মিলে ভিড় করা যাবে না। তাই পুজো একটু ফাঁকা ফাঁকা। প্রতিবছর পুজোর দিন আমাদের নিজস্ব বাৎসরিক পত্রিকা ‘আগমনী’ প্রকাশিত হয়। জমিয়ে হয় খাওয়াদাওয়া। আড্ডা। এভাবেই কেটে যায় আমাদের একদিনের পুজো। ঘট বিসর্জন করে আমাদের প্রতিমা রেখে আসি স্টোররুমে। দিন গোনা শুরু হয় পরের বছরের পুজোর।