প্রতিবেদন : কালীপুজোয় পাঁঠাবলির কথা শোনা যায়। কিন্তু বসিরহাট ইটিন্ডার সিদ্ধেশ্বরী কালীর পুজোর নিয়ম আলাদা। ইছামতীর গলদা চিংড়ি ছাড়া এই পুজো সম্পূর্ণ হয় না। বছরের পর বছর চলে আসছে এই রীতি। প্রায় ৪০০ বছর আগে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র যশোরের ধূমঘাট থেকে ইছামতী নদী ধরে টাকি যাচ্ছিলেন। সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকা সেসময় ছিল জঙ্গলে ঘেরা। দীর্ঘ নদীপথ পাড়ি দেওয়ার পর এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়েন রাজা। বসিরহাট শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে ইছামতীর পাড়ে একটা জায়গা বেছে বিশ্রামের ব্যবস্থা করেন।
আরও পড়ুন –৬০০ বছরের মা মাটিয়া কালী
রাত কাটিয়ে সূর্যোদয় দেখে মুগ্ধ হন তিনি। ঠিক করেন, এখানে একটি গঞ্জ তৈরি করবেন। ভাবনামতো শুরু হয় কাজ। নাম দেওয়া হয় ইটিন্ডা। টাকির জমিদার রায়চৌধুরিদের অধীন জায়গাটি পরিষ্কার করে গঞ্জের পাশাপাশি তৈরি হয় সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, বাঁশ ও বিচুলির ছাউনি দিয়ে। বসিরহাট ১ ব্লকের ইটিন্ডা-পানিতর গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্ন্তগত ইটিন্ডা কলবাড়ি সংলগ্ন এলাকার মন্দিরটি পরে পাকা হয়। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ইচ্ছেয় সিদ্ধেশ্বরী কালী মাকে ইছামতীর গলদা চিংড়ি নিবেদন করার প্রথা চালু হয়। সেই প্রথা আজও চালু। পুজোর এই ব্যতিক্রমী নিয়মে আকৃষ্ট অনেক ভক্তই। মন্দির সংলগ্ন পুকুর নিয়ে নানা লোককাহিনি চালু। মন্দির কমিটির সদস্য তপন পাল জানান, শোনা যায় এই পুকুরে মা কালীকে নানা রূপে দেখেছেন এলাকার মানুষ। তাই এই পুকুরে স্নান, জামাকাপড় কাচা নিষিদ্ধ। বিশ্বাস এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আজও পুজো পান ইটিন্ডার সিদ্ধেশ্বরী কালী।