সংবাদদাতা, নলহাটি : মানুষের মৃত্যু হলেও প্রথার মৃত্যু নেই। পরম্পরার মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে প্রথা। ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উপলক্ষে সেই পরম্পরাই দেখা গেল নলহাটিতে। সতী সেনের বয়স ৬৮। ৬৭ বছর ধরে তাঁর দাদু হরিরঞ্জন পালের ছবিতে ফোঁটা দিয়ে আসছেন তিনি। ভ্রাতৃদ্বিতীয়ায় অনেক পরিবারে দাদুকে নাতনিরা ফোঁটা দেন।
আরও পড়ুন-পরিবেশ সঙ্কট ও দারিদ্র, জোড়া ফলায় বিপর্যস্ত ভারতের ২২ কোটি শিশু
কিন্তু মৃত দাদুর প্রতিকৃতিতে এত বছর ধরে ফোঁটা দেওয়ার ঘটনা সচরাচর শোনা যায় না। বীরভূমের আহমদপুর থেকে ভাইফোঁটায় বাপের বাড়ি নলহাটি থানার বারা গ্রামে এসেছেন সতী সেন। তিনি বলেন, ‘‘নিজের পাঁচ ভাইয়ের পাশাপাশি এক বছর বয়স থেকে দাদুর প্রতিকৃতিতে ফোঁটা দিয়ে আসছি। তবে আগে দাদুর ফোঁটা দেওয়া হয়। বোন সুদেবী হালদার রামপুরহাটের নারায়ণপুর থেকে ফোঁটা দিতে এসেছে।” সতী সেনের ভাই মহাদেব মণ্ডল বলেন, ‘‘দুই দিদি দাদুর প্রতিকৃতিতে ফোঁটা দেন। আমাদের পাঁচ ভাইয়ের পাঁচ মেয়েরা আবার প্রয়াত বাবা রাজকুমার পালের প্রতিকৃতিতে ফোঁটা দেন। দাদু অনেক দিন আগেই মারা গেছেন। বাবা ২০০৩ সালে মারা যান। আমাদের বাড়িতে এই প্রথা দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। আগে প্রয়াত বাবা ও দাদুর প্রতিকৃতিতে ফোঁটা, মিষ্টি ও পায়েস দিয়ে তারপর শুরু হয় বাড়ির ফোঁটা।” মৃত ব্যক্তিকে ফোঁটা দেওয়া প্রসঙ্গে মহাদেব বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে শাস্ত্রের কোনও নির্দেশ নেই। পুরোটাই আবেগ। তাঁরা যে জগতেই থাকুন না কেন, আমরা তাঁদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি তাঁরা ফোঁটা গ্রহণ করেন। সেই মুহূর্তে তাঁরা আমাদের কাছে জীবিত হয়ে ওঠেন।”